জানুয়ারি ২১, ২০২৫ ৫:৫২ পূর্বাহ্ণ
ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর গাজার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি তাদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডবে গাজাবাসীদের ঘরবাড়ি একেবারে মাটিতে মিশে গেছে। যেখানে চারদিকে শুধুই ধ্বংসস্তূপ।
গাজা শহর থেকে পালিয়ে জাবালিয়ায় আশ্রয় নেন ৪৩ বছর বয়সি রানা মোহসেন। হাজারো ফিলিস্তিনির মত তিনিও যুদ্ধবিরতির দিনটির জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর তিনি রাফায় নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন।
তিন সন্তানের জননী মোহসেন বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘আমরা ১৬ মাস ধরে এই মুহূর্তটির জন্য অপেক্ষা করছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘আমার আনন্দ ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না। অবশেষে আমরা আমাদের বাড়িতে পৌঁছেছি। আমাদের বাড়ির কিছুই অবশিষ্ট নেই, চারদিক শুধুই ধ্বংসস্তূপ, তারপরও বলব এটা আমাদেরই বাড়ি।’
ইসরাইলি বাহিনী পুরো বাড়িটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘বাড়ির ছাদই কেবল অবশিষ্ট আছে। ধ্বংসের পরিমাণ ‘অকল্পনীয়’। ভবনের চিহ্নগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, যেন এটি একটি ভূতের শহর বা পরিত্যক্ত শহর।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের নিজ বাড়িতে ফিরে এসেছেন আহমেদ আল-বালাউই। রানা মোহসেনের মত একই দৃশ্য বর্ণনা করলেন তিনি।
এএফপিকে আহমেদ বলেন, ‘শহরে ফিরে আসার পর আমি হতবাক হয়ে গেছি। পচা মৃতদেহ, সর্বত্র শুধু ধ্বংসস্তূপ। পুরো এলাকা সম্পূর্ণরূপে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে।’
যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর ঘরে ফেরা ফিলিস্তিনিদের মৃতদেহ থেকে দূরে থাকার নির্দেশ দিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া কর্তৃপক্ষকে মৃতদেহগুলো দ্রুত সরিয়ে নেয়ার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
নানা ঘটনার পর রোববার (১৯ জানুয়ারি) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে বহুল প্রতীক্ষিত গাজা যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় প্রথম দিন তিন ইসরাইলি নারী জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। বিনিময়ে ৯০ ফিলিস্তিনি কারাবন্দিকে মুক্তি দেয় ইসরাইল।