সদ্য চালু হওয়া ঢাকা-কক্সবাজার রেলরুটে বাণিজ্যিক ট্রেনের সময়সূচি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা-কক্সবাজার রুটের প্রথম ট্রেন চলাচল শুরু হবে ঢাকা থেকে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের প্রথম ট্রেনটি চলাচল করবে কক্সবাজার থেকে। ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের চট্টলা এক্সপ্রেস আন্তঃনগর ট্রেনের অবমুক্ত রেক দিয়ে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের আন্তঃনগরগুলো চালানো হবে। ঢাকা রুটের ট্রেনটি চালানো হবে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আমদানিকৃত নতুন কোচ দিয়ে।
রেলওয়ের পরিবহন বিভাগের তথ্যমতে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে আরো দুই জোড়া কমিউটার ট্রেন সার্ভিস চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের কাজ শতভাগ শেষ না হওয়ায় আপাতত ঢাকা থেকে প্রতিদিন এক জোড়া ও চট্টগ্রাম থেকে এক জোড়া ট্রেন চালানো হবে। রেক বা কোচ ও ইঞ্জিন পাওয়া সাপেক্ষে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে আরো এক জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন চালানো হবে ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে।
ঢাকার ট্রেনটি (৮১৪) রাত ১০টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে ভোর ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছবে। ফিরতি পথে বেলা ১টায় কক্সবাজার থেকে ছেড়ে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় পৌঁছবে। সময় লাগবে ৮ ঘণ্টা ১০ মিনিট। ট্রেনটি শুধু চট্টগ্রাম স্টেশনে ৩০ মিনিটের যাত্রাবিরতি দেবে।
অন্যদিকে ৮২৪ নম্বর ট্রেন কক্সবাজার থেকে সকাল ৭টায় ছেড়ে বেলা ১০টা ৫ মিনিটে চট্টগ্রাম পৌঁছবে। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ৫ মিনিট। অন্য ট্রেনটি (৮২১) সকাল ৭টায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে ১০টা ২০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছবে। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা ২০ মিনিট।
ঢাকা-কক্সবাজার আন্তঃনগরে কোচ থাকবে ১৮টি। আসন থাকবে দিনের বেলায় ৮২৪টি, রাতে ৭৭৯টি। অন্তত ২০ শতাংশ আসন চট্টগ্রামের যাত্রীদের জন্য বরাদ্দ থাকবে।
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের আন্তঃনগর ট্রেনটি ষোলশহর, জালানীহাট, পটিয়া, দোহাজারী, সাতকানিয়া, চকরিয়া, ডুলাহাজরা ও রামু স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে কক্সবাজারে যাত্রী পরিবহন করবে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের ট্রেনটির রেকে মোট কোচ সংখ্যা হবে ১২টি। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীরা সকালে গিয়ে রাতেই চট্টগ্রামে ফিরতে পারবেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ের (পূর্বাঞ্চল) চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ১ ডিসেম্বর থেকে কক্সবাজারে ট্রেন চালাতে আমরা প্রস্তুত। প্রথম ট্রেনটি চলাচল শুরু করবে ঢাকা থেকে। দ্বিতীয় বাণিজ্যিক ট্রেনটি চলবে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম। কক্সবাজারকে ঘিরে অন্তত ৬ জোড়া ট্রেনের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হলেও শুরুতে দুই কিংবা তিন জোড়া ট্রেন চালানো হবে। পর্যায়ক্রমে বাকি ট্রেনগুলো চালানো হবে। ইঞ্জিন ও জনবল পাওয়া সাপেক্ষে চট্টগ্রাম-চাঁদপুর কিংবা ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের আরো কয়েকটি ট্রেনের গন্তব্য স্টেশন কক্সবাজার পর্যন্ত বাড়ানো হবে।
এদিকে, ঢাকা-কক্সবাজার রেলরুটে ট্রেনের ভাড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত লোকাল ট্রেনের সর্বনিম্ন ভাড়া ১২৫ টাকা এবং আন্তঃনগর ট্রেনে সর্বনিম্ন ৫০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চূড়ান্ত তালিকায় দেখা গেছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার যেতে সর্বনিম্ন ভাড়া লাগবে ১২৫ টাকা আর মেইল ট্রেনে লাগবে ১৭০ টাকা। শোভন চেয়ারে ৫০০ ও এসি বার্থে (ভ্যাটসহ) পড়বে ১ হাজার ৭২৫ টাকা। এছাড়া সুলভ শ্রেণির ২৫০, শোভন শ্রেণির ৪২০, প্রথম চেয়ার/সিট ভাড়া (ভ্যাটসহ) ৬৭০, প্রথম বার্থের (ভ্যাটসহ) ১ হাজার, স্নিগ্ধা শ্রেণির (ভ্যাটসহ) ৯৬১ এবং এসি সিট শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর কমিউটার ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২১০ টাকা।
ঢাকা থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বাণিজ্যিক দূরত্ব ৫৩৫ কিলোমিটার ধরে এ ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।