সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ ৭:২৯ পূর্বাহ্ণ
পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ হচ্ছে। আগামী ১ অক্টোবর থেকে সুপারশপ, বাজার-ঘাট, দোকান- কোথাও পলিথিন শপিং ব্যাগ, পলিপ্রপিলিনের ব্যাগ বা পলিথিন জাতীয় কোনো কিছু রাখা যাবে না এবং ক্রেতাদেরকে দেওয়া যাবে না বলে ঘোষণা করেছে সরকার।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পলিথিন শপিং ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সভায় এ সিদ্ধান্ত জানান অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ কাজে তরুণ বা শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে ১ অক্টোবরের শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধের বিষয়টি ব্যাপকভাবে প্রচার করা হবে। পত্রিকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এক সপ্তাহের মধ্যে সব সুপারশপের সঙ্গে সভা করে পাটের শপিং ব্যাগের সরবরাহ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এর আগে, গত ২ সেপ্টেম্বর “পুরান ঢাকায় নিষিদ্ধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসা” শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে জনপ্রিয় একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল। প্রতিবেদনটিতে পুরান ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় নিষিদ্ধ পলিথিনের রমরমা ব্যবসার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। যেটি ছড়িয়ে পড়ে সারা বাংলাদেশে। কয়েকজন বিএনপি নেতার শেল্টারে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ নেতা হাজী আমিনুল হক মুরাদ নামে এক ব্যক্তিও এ অবৈধ ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, প্রতিরাতে চকবাজারের ইমামগঞ্জের সড়ক বাতি নিভিয়ে রাত ৯টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মধুপুর এবং রহমানিয়া ট্রান্সপোর্টসহ বিভিন্ন ট্রান্সপোর্টে পলিথিন লোড করা হয়। সেখান থেকে সারাদেশে পাঠানো হয়। প্রতিরাতে ২০০ থেকে ৩০০ টন পলিথিন সরবরাহ করে থাকে চক্রটি।
রাজনৈতিক পট পরির্বতনের পর মুরাদের অবৈধ ব্যবসা পরিচালনায় সহায়তা করছেন ৩০-নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি হায়দার, বিএনপি নেতা মিন্টু ও ওয়ার্ড যুবদলের সদস্য সচিব বরকত উল্লাহ মাসুদ ওরফে কালু। কালু সরাসরি মুরাদের ব্যবসায়ী সহযোগী। বর্তমানে মুরাদের ব্যবসা সামলাচ্ছেন তিনি।
অনুসন্ধানী প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর বিষয়টি নতুন করে আলোচনা তৈরি করে। সূত্র জানিয়েছে, সচিবালয়ে পলিথিন শপিং ব্যাগের নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করার সিদ্ধান্তের নেপথ্যে প্রতিবেদনটি ভূমিকা রেখেছে।
প্রসঙ্গত, পলিথিন ও প্লাস্টিক বর্জ্যের ভয়াবহ দূষণের শিকার হয়ে বাংলাদেশের পরিবেশ, প্রাণ-প্রকৃতি ও জনস্বাস্থ্য ভয়াবহ হুমকির সম্মুখীন।
জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক ইনিশিয়েটিভে বাংলাদেশের নাম উঠে আসছে বারবার। সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ঝুঁকির বিষয়গুলোর পাশাপাশি জ্বালানি ব্যবস্থাপনা, বায়ু, পানি ও পরিবেশ দূষণের মতো বিষয়গুলো আলোচিত হচ্ছে। পলিথিন বর্জ্যের ক্ষতিকর দিকগুলো আলোচিত হচ্ছে নানাভাবে।
ঢাকাসহ সারা দেশে পলিথিনের ব্যবহার কমিয়ে আনতে আইনের পরিবর্তনের পাশাপাশি বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু উদ্যোগের কথা শোনা গেছে আগেও। তবে বাস্তবে তার কোনো সুফল দেখা যায়নি। আইন থাকলেও আইনের সঠিক বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় তা কোনো কাজে আসেনি।