আগস্ট ১৫, ২০২৩ ২:৫১ অপরাহ্ণ
দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে না পেরে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের অনেকের খাবারের তালিকা থেকে মাংস আগেই বাদ পড়েছে। ‘গরিবের প্রোটিন’খ্যাত ডিমও এখন দামের দিক থেকে আর গরিবের নেই। আমিষের স্বাদ নিতে অনেকে তেলাপিয়া-পাঙাশের মতো স্বল্পমূল্যের মাছ কিনতেন; তাও এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে। সোমবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্যে মাছের বাজারও এখন অস্থির। এদের সঙ্গে খুচরা বিক্রেতারা জোট বেঁধে নানা অজুহাতে ইচ্ছামতো পকেট কাটছে ভোক্তার। ফলে তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের খুচরা মূল্য কেজিতে ১০০ টাকা বেড়েছে। তবে এই বাড়তি দামে মৎস্য চাষির কিন্তু কোনো লাভ হচ্ছে না। লাভ করছেন শুধু বিক্রেতারা।
চাষিরা বলছেন, পুকুরের জমি লিজ নেওয়া, শ্রমিকের মজুরি এবং মৎস্য খাবারের মূল্যবৃদ্ধিতে মাছের দাম বাড়ালেও তা খুবই কম। মধ্যস্বত্বভোগীরা তাদের কাছ থেকে কম দামে কিনে খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে। আবার খুচরা বিক্রেতারা বেশি লাভে বিক্রি করায় মাছের দাম এখন প্রায় আকাশ ছুঁয়েছে। এদিকে খুচরা বিক্রেতাদের পালটা অভিযোগ, চাষি পর্যায়ে দাম বাড়িয়ে দেওয়ায় তারা নিরুপায়। যদিও বাস্তবতা বলছে, মাছের দামের অস্বাভাবিকতার দায় মধ্যস্বত্বভোগীদের ওপরেই বর্তায়। এমন অবস্থায় শাঁখের কড়াতে পড়া ভোক্তাসাধারণ বাজারে মাছ কিনতে এসে এক দোকান থেকে অন্য দোকানে ঘুরলেও দাম মিটিয়ে মাছ আর ব্যাগে তুলতে পারছেন না। ফলে ক্রেতার ক্ষোভের সীমা বিক্রেতা ছাড়িয়ে সরকারের ওপর গিয়ে পড়ছে। কর্তৃপক্ষের যথাযথ মনিটরিং না থাকার কারণেই বাজারের এমন পরিস্থিতি বলে তাদের অভিযোগ। বলার অপেক্ষা রাখে না, সার্বিক মূল্যস্ফীতির কারণে কষ্টে থাকা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের কথা ভেবে বাজার মনিটরিং জোরদার করা জরুরি। কিন্তু কার্যত তা পরিলক্ষিত হচ্ছে না। অতি মুনাফার সঙ্গে যারা জড়িত, অবিলম্বে তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় না আনা হলে বাজার পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে। অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে মাছের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি রোধে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
সম্পাদকীয়, ১৪-০৮-২০২৩