মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ ঘাঁটি ৪৫ হাজার সেনা

মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ১০ ঘাঁটি ৪৫ হাজার সেনা

আন্তর্জাতিক স্লাইড

নভেম্বর ৭, ২০২৩ ১২:০১ অপরাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধনেই ইসরাইল আজ এত বড় মধ্যপ্রাচ্য থেকে শুরু করে বিশ্বের সব দেশেই এটি ‘ওপেন সিক্রেট’। তবে ৭ অক্টোবর ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর পর থেকে গত কয়েক দশকের মধ্যে এবার সেটাই প্রথম প্রকাশ্যে এলো যুক্তরাষ্ট্র কি না করতে পারে ইসরাইলের জন্য! এক ইসরাইলকে রক্ষায় মুহূর্তে ধ্বংস করে দিতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের গোটা মুসলিম ভূখণ্ড। তবে আশার কথা হলো, মধ্যপ্রাচ্যের মুকুটহীন সম্রাট ইরান ছাড়া বাকি আরব দেশগুলোর কেউই যুক্তরাষ্ট্রের হুকুমের বাইরে চলে না। সুতরাং ইসরাইলের সঙ্গে ওপর ওপর তেমন বন্ধুত্ব না থাকলেও ভেতর ভেতর শত্রুতাও নেই। একমাত্র সমস্যা ইরান। আর এই ইরানকে ভয় দেখাতেই মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাজা-বাদশাহদের বশীভূত করে একের পর এক ঘাঁটি গেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ইসরাইলকে সুরক্ষায় মধ্যপ্রাচ্যে বৃহত্তর সংঘাতে জড়ানোর পূর্বপ্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। ছোট-বড় মিলিয়ে শক্তঘাঁটিও গড়ে তুলেছে ১০টি। ৪৫,০০০ সেনার শক্তিশালী দুর্গ গড়ে তুলেছে তুরস্ক, সিরিয়া, কুয়েত, বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, সৌদি আরব, জর্ডান এবং ইসরাইলে। নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার অজুহাতে সাম্রাজ্যবাদের ঝাণ্ডা গেড়েছে মধ্যপাচ্যের বুকে।

ইসরাইল ও জর্ডান : ইসরাইলে কতজন মার্কিন সৈন্য রয়েছে তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে ধারণা করা হয়, ইসরাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অন্তত একটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এটি একটি শ্রেণিবদ্ধ ঘাঁটি। যার কোড-নাম ‘সাইট-৫১২’। এতে রাডার নজরদারি সিস্টেম রয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের হুমকি শনাক্ত করতে সক্ষম। জর্ডানের রাজনীতিতে মার্কিন সেনাদের উপস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ সমস্যা রয়েছে। তবুও ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত জর্ডানে প্রায় ২,৯০০ সেনা ছিল। আইএসের বিরুদ্ধে জর্ডানের অভিযানকে সমর্থন, নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল।

কাতার : মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সেনাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি কাতার। কমপক্ষে ৮,০০০ মার্কিন বাহিনী দোহার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত বৃহৎ আল উদেইদ বিমান ঘাঁটিতে মোতায়েন করে রেখেছে পেন্টাগন। দেশটি একই সঙ্গে ইসরাইলের প্রতিপক্ষ হামাসকেও তাদের দেশে কার্যক্রমের অনুমতি দিয়েছে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে দোহায় হামাসের একটি রাজনৈতিক কার্যালয় পরিচালনা করছে। এতে সংগঠনের সর্বোচ্চ নেতা ইসমাইল হানিয়াহসহ হামাসের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন। হামাস এবং পশ্চিমাদের সঙ্গে কাতারের এমন মধ্যস্থতায় ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে দেশটি।

বাহরাইন এবং তুরস্ক : ২০২২ সাল পর্যন্ত বাহরাইনে ৯,০০০ মার্কিন সেনা পাঠানো হয়। এটি মার্কিন পঞ্চম নৌবহরের সদর দপ্তর। ১৯৯১ সাল থেকে হাজার হাজার মার্কিন বাহিনী কুয়েতে অবস্থান করছে। দেশটি ইরাক যুদ্ধের সময় মার্কিন এবং জোট বাহিনীর জন্য একটি বড় লজিস্টিক ঘাঁটিও পরিবেশন করেছিল। ২০২১ সালে কুয়েতে ১৩,৫০০ মার্কিন সেনা ক্যাম্প আরিফজান এবং আলি আল-সালেম বিমান ঘাঁটিতে অবস্থান করেছে।

সৌদি আরব : ২০২২ সালের ডিসেম্বরে সৌদি আরবে ২,৭০০-এর বেশি মার্কিন সেনা মোতায়েন ছিল। দেশটির সশস্ত্র বাহিনীকে প্রশিক্ষণ, পরামর্শ এবং সহায়তা করার জন্য তাদের নিয়োগ করা হয়। হোয়াইট হাউজের মতে, সেখানে অবস্থারত সেনারা বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বজায় রাখে এবং সামরিক বিমান পরিচালনায় সহায়তা করে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) : সংযুক্ত আরব আমিরাত কয়েক বছর ধরে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র। দেশটিতে ৩,৫০০ মার্কিন সেনা অবস্থান করেছে। উপসাগরীয় বিমান যুদ্ধ কেন্দ্র আল ধফরা এয়ার বেসে অবস্থান করছে সেনারা। এটি একটি আঞ্চলিক বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। এটি যৌথভাবে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত।

ওমান ও তুরস্ক : ওমানে কয়েকশ মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। তুরস্কে যুক্তরাষ্ট্রের ১,০০০-এর বেশি সৈন্য রয়েছে। আদানা শহরের কাছে একটি বিমান ঘাঁটিতে অবস্থান করছে সেনারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *