রিপোর্টার্স২৪ ডেস্ক: চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘ ফোনালাপের পর আগামী বছরের এপ্রিলেই বেইজিং সফরে যাওয়ার পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তাই নয় ২০২৫ সালে শি জিনপিংকে আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় সফরে যুক্তরাষ্ট্রে আমন্ত্রণও জানিয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক সময়ের উত্তেজনাপূর্ণ ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যে দুই পরাশক্তির এ আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিবিসি জানিয়েছে, বুসানে গত মাসে হওয়া সামনাসামনি বৈঠকের পর দুই নেতার মধ্যে এটিই প্রথম বড় ধরনের কূটনৈতিক যোগাযোগ। ফোনালাপে বাণিজ্যনীতি, ইউক্রেন যুদ্ধ, ফেন্টানিল সংকট এবং তাইওয়ানসহ নানা স্পর্শকাতর বৈশ্বিক ইস্যু নিয়ে দুপক্ষ বিস্তারিত মতবিনিময় করে।
ফোনালাপের পর ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে লেখেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত দৃঢ়! অন্যদিকে চীনের সরকারি বার্তা সংস্থা জানায়, ওয়াশিংটন বেইজিং উভয় দেশই পারস্পরিক সম্মান, সমতা ও লাভজনক সহযোগিতার ভিত্তিতে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে।
গত অক্টোবরে বুসানের বৈঠকে বাণিজ্য যুদ্ধ প্রশমনের লক্ষ্যে দুই দেশই বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে পৌঁছায়। যুক্তরাষ্ট্র তখন ফেন্টানিল সম্পর্কিত পণ্যে আরোপ করা ২০ শতাংশ শুল্ক অর্ধেকে নামিয়ে আনে এবং ১০০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের হুমকি প্রত্যাহার করে। পাল্টা হিসেবে চীনও বিরল ধাতুর রফতানিতে নতুন নিয়ন্ত্রণ আরোপের পরিকল্পনা স্থগিত করে। যদিও এখনো চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গড় শুল্ক প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি রয়েছে।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানান, সোমবার অনুষ্ঠিত ফোনালাপ প্রায় এক ঘণ্টা স্থায়ী ছিল। আলোচনার বড় অংশজুড়েই ছিল বাণিজ্য সম্পর্কিত বিষয়। তিনি বলেন, চীন থেকে ইতিবাচক সংকেত পাচ্ছি, এবং তারাও একইভাবে এগোতে আগ্রহী।
কেবল বাণিজ্য নয়। রাশিয়ার ইউক্রেনে আক্রমণ এবং তাইওয়ানের ভবিষ্যৎ নিয়েও বিস্তারিত আলোচনায় অংশ নেন দুই নেতা। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং স্পষ্ট করে বলেন, তাইওয়ানকে চীনে পুনর্মিলন যুদ্ধ পরবর্তী আন্তর্জাতিক কাঠামোর জন্য চীনের কৌশলগত অবস্থানের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তাইওয়ান ইস্যুতে এই মুহূর্তে আঞ্চলিক উত্তেজনা আরও বাড়ছে। চীন ও জাপানের সম্পর্ক তাইওয়ান কেন্দ্রিক বিরোধে টানটান। জাপান যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। মাসের শুরুতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি সতর্ক করেন। তাইওয়ানে চীনের সামরিক হামলা হলে জাপানও সামরিক প্রতিক্রিয়ায় যেতে বাধ্য হবে।
তবে ট্রাম্প তার পোস্টে তাইওয়ান ইস্যু নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
রিপোর্টার্স২৪/ঝুম