সিনিয়র রিপোর্টার: গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার অধ্যাদেশ জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। এতে গুমের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডসহ কঠোর দণ্ডবিধান রাখা হয়েছে। সোমবার (২ ডিসেম্বর) এ অধ্যাদেশের গেজেট প্রকাশ করা হয়।
অধ্যাদেশ অনুযায়ী, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুম প্রতিরোধ ও প্রতিকার ট্রাইব্যুনাল গঠন করা হবে। এই আইনের আওতায় গুমকে জামিন ও আপস অযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার, আটক, অপহরণ বা স্বাধীনতা হরণ করার পর যদি কোনো সরকারি কর্মচারী বা আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বিষয়টি অস্বীকার করেন বা ওই ব্যক্তির অবস্থান ও পরিণতি গোপন রাখেন এবং এ কারণে তিনি আইনগত সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হন, তা গুম হিসেবে গণ্য হবে। এসব অপরাধে দায়ী ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া যাবে।
গুমের ফলে কোনো ব্যক্তির মৃত্যু ঘটলে বা গুমের পাঁচ বছর পরেও তাকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা না গেলে সংশ্লিষ্ট দায়ীদের মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া গুমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি যদি ইচ্ছাকৃতভাবে সাক্ষ্য–প্রমাণ গোপন, বিকৃত বা নষ্ট করেন কিংবা গোপন আটককেন্দ্র নির্মাণ, স্থাপন বা ব্যবহার করেন, তবে তার সাত বছরের কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড হতে পারে।
রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা অন্য কোনো অজুহাত এই আইনের ক্ষেত্রে কার্যকর হবে না। গুমের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য হলেও মূল অপরাধের সমান দণ্ডপ্রাপ্ত হবেন। এছাড়া অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক থাকলেও বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে।
গত ৬ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অধ্যাদেশটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেসসচিব শফিকুল আলম এ অধ্যাদেশকে ‘ঐতিহাসিক’ উল্লেখ করে বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুসরণ করে এটি প্রণয়ন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, গুম কমিশনে প্রায় দুই হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে; তবে মোট গুমের সংখ্যা চার হাজারের মতো হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এর আগে গত ২৮ আগস্ট মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে ‘গুম প্রতিরোধ, প্রতিকার ও সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ।
রিপোর্টার্স২৪/এসসি