স্টাফ রিপোর্টার:

বেশ কিছুদিন ধরেই দেশের অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে আসছে  রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এই দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার (৮ মে) রাত থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করে দলটি নেতাকর্মীরা ।  শুক্রবার সেই কর্মসূচি স্থান পরিবর্তন করে শাহবাগে পালন করছে তারা। 

শুরুতে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে শুধুমাত্র এনসিপি কর্মসূচি শুরু করলেও শুক্রবার বাংলাদেশ ইসলামি ছাত্র শিবিরও এতে একাত্বতা জানায়। যদিও তাদের মূল দল জামায়াতে ইসলামের নেতারা এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিপক্ষেই কথা বলেছেন। এ অবস্থায় এনসিপির কর্মসূচিতে শিবিরের একাত্বতা যেনো জামায়াতের রাজনৈতিক অবস্থানকে ধোঁয়াশায় ফেলে দিয়েছে।

এদিকে, ছাত্রশিবির ছাড়াও এনসিপির কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই ঐক্য’র মতো নামসর্বস্ব কিছু দল। কিন্তু বিএনপি, জাতীয় পার্টির মতো বড় দলগুলোর কাউকেই তাদের কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এ অবস্থায় এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বিএপিকে শাহবাগে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এতে অনেকেই বলছেন, আন্দোলন জমাতে বিএনপির অপেক্ষা করছে এনসিপি।

শুক্রবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া পোস্টে সারজিস লেখেন, ‘বিএনপি এবং তার অঙ্গসংগঠন ব্যতীত সকল রাজনৈতিক দল এখন শাহবাগে। বিএনপি এলে জুলাইয়ের ঐক্য পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়। আজকের এই শাহবাগ ইতিহাসের অংশ এবং ভবিষ্যৎ রাজনীতির মানদণ্ড।’ এনসিপি নেতার এই কাতরতাই যেনো প্রমাণ দিচ্ছে, ‘বিএনপিকে পাশে না পেয়ে আন্দোলন ঠিক জমছে না।’

এদিকে শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে এনসিপির অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে কথা বলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। আমরা বিএনপি হিসেবে এ সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিক না। এ সিদ্ধান্তের মালিক জনগণ। জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে- কে নির্বাচন করতে পারবে, কে পারবে না।’

মঈন খান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বরাত দিয়ে বলেন, এটা নিয়ে আমাদের দলের মহাসচিব বলেছেন যে ‘এটা জনগণের সিদ্ধান্তের বিষয়। জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কারা নির্বাচন করবে আর কারা করবে না।’

এর আগে ‘শাহবাগ ব্লকেড’ কর্মসূচির ঘোষণা দেন এনসিপি দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তার পরপরই মিন্টো রোড থেকে শাহবাগ অভিমুখে মিছিল নিয়ে যান আন্দোলনকারীরা। এরপর শাহবাগ মোড়ে বসে পড়েন তারা।

এ সময় তারা ‘ব্যান ব্যান আওয়ামী লীগ, একটা একটা লীগ ধর, ধরে ধরে জেলে ভর, ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, শেখ হাসিনার ফাঁসি চাইসহ’ বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

বিকেল ৫টার দিকে আপ বাংলাদেশের আহ্বায়ক আলী আহসান জুনায়েদের নেতৃত্বে একটি মিছিল শাহবাগে যোগ দেয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বাংলামোটর অভিমুখ থেকে ঢাকা মহানগর শিবিরের কয়েকশ নেতাকর্মী শাহবাগে এসে যুক্ত হন। এ সময় তারা শিবির শিবির স্লোগান দিতে থাকেন।

শাহবাগে ব্লকেডে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা বলছেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়বেন না তারা।

রিপোর্টার্স২৪/ধ্রুব