জানুয়ারি ৭, ২০২৪ ৪:০৩ অপরাহ্ণ
পছন্দের যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পর হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে কালি লাগিয়ে দেওয়া হয়। এটি ভোট প্রদানের চিহ্ন হিসেবে কাজ করে। এই কালি অনেকের কাছেই রহস্যের। কেননা কালো কালি লাগানোর কিছুক্ষণের মধ্যেই নীল হয়ে যায়।
কালি নীল হয়ে যাওয়ার পর সাবান, তেল সবকিছু দিয়ে ঘষলেও এই দাগ উঠে না। কী দিয়ে তৈরি হয় এই কালি? চলুন জানা যাক-
ভোটের কালির পুরোটাই রসায়নের খেলা। যে কেউ চাইলে এটি বানাতে পারবেন না। বেশ গোপনভাবেই ভোটের কালি তৈরি হয়। ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল ফিজিকাল ল্যাবরেটরি এই কালি তৈরির সিক্রেট ফরমুলা তুলে দেয় মাইসোরের কালি নির্মাণকারী সংস্থার হাতে। যে ফর্মুলা আজও গোপন রয়েছে।
এদিকে গোপনীয়তার স্বার্থে কী কী উপাদান কতটা পরিমাণ মিশিয়ে ভোটের কালি তৈরি হয়, তা কখনোই প্রকাশ্যে আনা হয়নি। এতে সিলভার নাইট্রেট আর অ্যালকোহল ছাড়া আর কি উপাদান থাকে, তা জানা যায়নি। বিশ্বের আরো ২৫টি দেশের নির্বাচন উপলক্ষে এই কালি ব্যবহার করা হয়।
অবাক হলেও সত্য যে, দু-একজন বাদে সংস্থার কর্মীরাও পুরোপুরি জানেন না, আসলে ঠিক কী করে তৈরি হয় এই কালি। সাধারণভাবে মনে করা হয়, এই কালি আসলে তৈরি হয় রূপার একটি রাসায়নিক পদার্থ (সিলভার নাইট্রেট বা AgNO3) আর পাতিত পানির সংমিশ্রণে। সঙ্গে থাকে কিছুটা অ্যালকোহল। যার কারণ খুব দ্রুত কালিটি শুকিয়ে যায়। আর থাকে বিশেষ কিছু রঙ।
ভোটের কালির দীর্ঘস্থায়ীত্বের পেছনে আসল কাজ করে সিলভার নাইট্রেট। এটি চামড়ার প্রোটিনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে বিশেষ এক প্রকার অধঃক্ষেপ তৈরি করে, যা চামড়ার সঙ্গে সেঁটে যায়। কালিতে সিলভার নাইট্রেটের আধিক্য যত বেশি থাকবে সেটি তত বেশি টেকসই হবে।
আমাদের দেশে ভোটের সময় যে কালি ব্যবহৃত হয় সাধারণত তাতে প্রায় ১৮ শতাংশের কাছাকাছি থাকে সিলভার নাইট্রেটের ঘনত্ব, মোটামুটি সপ্তাহ তিনেক এটি স্থায়ী হতে পারে। আর কালি লাগানোর পর যদি হাতে অতিবেগুনি রশ্মি লাগে তাহলে তা হয় আরো স্থায়ী। বেগুনি রঙ তখন বদলায় কালচে-বাদামি রঙে।
তবে ভোটের কালি মানেই যে বেগুনি হবে, এমনটা নয়। অন্য রঙও হতে পারে। যেমন, লাতিন আমেরিকার সুরিনেম দেশটিতে ভোটের কালির রং কমলা। ভোটারদের আকর্ষণ করতে একদা ডাচ কলোনি সুরিনেমের জাতীয় রঙের সঙ্গে মিল রেখেই এই পরিবর্তন আনা হয়।