এপ্রিল ২৯, ২০২৪ ৯:০৪ পূর্বাহ্ণ
থামছেই না গাজায় ইসরাইলের আক্রমণ। প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নির্দেশে প্রতিদিনই বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। বিশ্বজুড়ে চলমান আন্দোলনকে তোয়াক্কা করছে না ইসরাইল সেনাবাহিনী। অন্যদিকে ফিলিস্থিনপন্থি বিশ্বনেতাদের ডাকেও কানে আঙুল দিয়ে বসে আছে তেল আবিব।
আন্তর্জাতিক আইনকে অমান্য করে নির্বিচারে চালানো হচ্ছে হত্যা, নির্যাতন ও ধ্বংসযজ্ঞ। নারী-শিশুসহ তিলে তিলে শেষ করা হচ্ছে অবরুদ্ধ অঞ্চলটিকে। অন্যদিকে ইসরাইলের এমন কর্মকাণ্ডেও কিছু করতে পারছে না বিশ্ব। তবে এবার জানা যাচ্ছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করতে পারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
শনিবার দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। মারিভ পত্রিকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে, আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কায় অত্যন্ত চাপে এবং আতঙ্কের মধ্যে আছেন নেতানিয়াহু। দ্যা নিউ আরব।
শুধু নেতানিয়াহু নন, তার বিশিষ্ট কিছু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও এই গ্রেফতারি নোটিশ আসতে পারে। ইসরাইলি মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট এবং আর্মি চিফ অব স্টাফ হার্জি হালেভির সেই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করার জন্য সিনিয়র সরকারী কর্মকর্তারা এ সপ্তাহে তেল আবিবে জরুরি বৈঠক করেছেন। এরই মধ্যে গ্রেফতারি পরোয়ানা ঠেকাতে নেতানিয়াহু আন্তর্জাতিক বন্ধুদের, বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। কখন গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হতে পারে, তা স্পষ্ট নয় এবং এই ধরনের তথ্য প্রকাশ করা আদালতের জন্য আদর্শ নয়। তবে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আশঙ্কা প্রথম বৃহস্পতিবার মার্কিন ট্যাবলয়েড নিউইয়র্ক পোস্টে ব্রিটিশ-ইসরাইলপন্থি ভাষ্যকার ডগলাস মারে একটি মতামতের অংশে প্রচার করেছিলেন।
মারে লিখেছেন, কয়েকদিনের মধ্যে ওয়ারেন্ট জারি হতে পারে। এতে নেতানিয়াহু অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি হবেন না। তবে এটি প্রধানমন্ত্রীর জন্য বিশ্বমঞ্চে একটি বড় ধাক্কা এবং ইসরাইলের মিত্র ও আইসিসি সদস্যদের ওপর কাজ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। এর আগে শুক্রবার এক এক্সবার্তায় নেতানিয়াহু লিখেছেন, ‘ইসরাইলের সহজাত ও আত্মরক্ষার অধিকার খর্ব হয়, আইসিসির এমন কোনো প্রচেষ্টা আমার নেতৃত্বে এ দেশটি মেনে নেবে না। মধ্যপ্রাচ্যের একমাত্র গণতন্ত্র ও বিশ্বের একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের সামরিক কর্মকর্তাদের জব্দ করার হুমকি আপত্তিজনক।
আমরা এর কাছে কখনো মাথা নত করব না।’ গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের জন্য এ ধরনের ওয়ারেন্টের অর্থ কী হবে, তা নিয়ে সিনিয়র ইসরাইলি কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন বলে জানা গেছে। ইসরাইলের চ্যানেল ১৩ সম্প্রচারকারী কর্মকর্তাদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, তারা বিশ্বাস করেন ট্রাইব্যুনাল জুনিয়র সৈন্যদের পরিবর্তে নীতিনির্ধারকদের টার্গেট করবে।
উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবরের পর থেকে গাজায় একাধিকবার আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে হামলা চালায় ইসরাইল। আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও ২.৩ মিলিয়ন জনসংখ্যার ক্ষুধা ও চিকিৎসাব্যবস্থাকেও ধ্বংস করা হয়েছে। এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তাদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।