ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩ ১১:৩০ পূর্বাহ্ণ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ আজ। সোমবার রিটার্নিং কর্মকর্তারা প্রতীক বরাদ্দ দেবেন। এর পর আজ থেকেই প্রতীক নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় মাঠে নামবেন প্রার্থীরা। তারা ভোটারদের কাছে যাবেন। ভোট চাওয়া শুরু করবেন।
ঘোষিত তফশিল অনুযায়ী, নির্বাচনি প্রচারণা চলবে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। আর ৭ জানুয়ারি হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ।
এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ৩৪৭ প্রার্থী। তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর চূড়ান্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ১৯০২ জন। এর মধ্যে স্বতন্ত্র এবং নিবন্ধিত ২৭টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থী আছেন। চূড়ান্ত প্রার্থীদের উল্লেখযোগ্য অংশ স্বতন্ত্র। স্বতন্ত্রদের তালিকায় বেশ কয়েকজন বর্তমান সংসদ-সদস্যও আছেন। তারা দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র হিসাবে ভোটের লড়াইয়ে নেমেছেন।
রোববার বিকালে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের সময় শেষ হয়েছে। ওই সময়ের পর চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় প্রকাশ করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তারা। আজ সোমবার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। এর পরই শুরু হবে প্রচারযুদ্ধ। প্রার্থীদের প্রচারের সুবিধার্থে এদিন থেকে ভোটবিরোধী সব ধরনের সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত প্রচার চালাতে পারবেন প্রার্থীরা। আর ভোটগ্রহণ হবে আগামী ৭ জানুয়ারি।
গতকাল রাতে নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থীদের বিষয়ে তথ্য জানান নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। তিনি বলেন, রিটার্নিং অফিসারদের পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, এ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের সংখ্যা ছিল ২৭১৬। যাচাই-বাছাইয়ে বাতিল হয় ৭৩১। বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের হয় ৫৬০টি। আপিলে প্রার্থিতা ফিরে আসে ২৮৬ জনের। আপিল নামঞ্জুর হয়েছিল ২৭৪টি। সারা দেশে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার হয়েছে ৩৪৭টি। স্থগিত আছে ৫টি। প্রত্যাহার শেষে এখন মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৮৯৬টি। তিনি বলেন, এখন মোট ২৭টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। ২৮টি রাজনৈতিক দলের থেকে একটি দল অর্থাৎ গণতন্ত্রী পার্টি বাদ গেছে। প্রার্থীদের নির্বাচন কমিশনের আচারণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান সচিব।
এদিকে রোববার হাইকোর্টে নির্বাচন কমিশনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন ৬ জন। বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি এসএম মনিরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। প্রার্থিতা ফিরে পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন-মুন্সীগঞ্জ-২ স্বতন্ত্র প্রার্থী সোহানা তাহমিনা, টাঙ্গাইল-৬ স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ, মানিকগঞ্জ-২ তৃণমূল বিএনপির মো. জসীম উদ্দিন, লক্ষ্মীপুর-২ স্বতন্ত্র সেলিনা ইসলাম, রাজশাহী-১ স্বতন্ত্র মো. গোলাম রব্বানী ও বগুড়া-৩ স্বতন্ত্র মো. ফেরদৌস স্বাধীন ফিরোজ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ নিবন্ধিত ২৯টি রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছিল। সেখান থেকে একটি দল বাদ পড়েছে, অপরটির তথ্য পাওয়া যায়নি। বিএনপিসহ ১৫টি রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। নির্বাচনে অংশ নেওয়া বড় রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতার মাধ্যমে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় শরিক জোটের দলগুলোকে ৩২টি আসন ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই ৩২টি আসনে সরকারি দলের কোনো প্রার্থী থাকছে না। দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তে জাতীয় পার্টি ২৬, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ তিনটি, দুটি ওয়ার্কার্স পার্টি এবং একটি জাতীয় পার্টির (জেপি) একজন প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে। তাদের সমর্থনে নিজ দলের প্রার্থীদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। তবে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে না আওয়ামী লীগ। এর ফলে বেশিরভাগ আসনেই নিজেদের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে যাচ্ছে।