অক্টোবর ৭, ২০২৪ ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ
দেশের নন-ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর (এনবিএফআই) খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে ২৪ হাজার ৭১১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এ বছরের জুন পর্যন্ত বিতরণকৃত মোট ঋণের ৩৩.১৫ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, মার্চের শেষে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩২ শতাংশ।
এনবিএফআইগুলোকে বাজার পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে সুদহার নির্ধারণের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আগে এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সুদহার নির্ধারিত হতো ‘সিক্স মানথস মুভিং এভারেজ রেট অভ ট্রেজারি বিল’ বা স্মার্ট পদ্ধতিতে।
আগের চেয়ে কড়া মনিটরিংয়ের ফলে এনবিএফআইগুলোর ঋণ অনিয়মের ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আগামী কয়েক প্রান্তিকে খেলাপি ঋণের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক স্থিতিশীলতা প্রতিবেদন ২০২৩-এর তথ্য অনুসারে, ২০১৯ সাল থেকে এনবিএফআই খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ক্রমাগত বাড়ছে। ২০১৯ সালে এ খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৯.৫৩ শতাংশ, ২০২৩ সালে তা বেড়ে ২৯.২৭ শতাংশে দাঁড়ায়।
একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘বর্তমানে অনেক আর্থিক প্রতিষ্ঠান তারল্য সংকটে ভুগছে। কারণ অনেক প্রতিষ্ঠানের নানা অনিয়মের কারণে ভাবমূর্তি নষ্ট হওয়ায় আমানত পেতে সমস্যা হচ্ছে। আমানত না পাওয়ায় নতুন করে ঋণ বিতরণ কম হচ্ছে। আর আগের দেওয়া ঋণ যেসব ঋণ দীর্ঘদিন পুনঃতফসিল করা হচ্ছে, এখন সেগুলো খেলাপি হচ্ছে।’
‘পাশাপাশি ঋণগ্রহীতাদের ব্যবসা-বাণিজ্য খারাপ থাকার কারণে অনেকে সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারেনি। তাই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ ক্রমেই বেড়ে চলছে,’ বলেন তিনি।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ ৩৪টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১২টির বেশি প্রতিষ্ঠানের ৩০ শতাংশেরও বেশি ঋণ খেলাপি হয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের হার ৫০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ।
এত বেশি খেলাপি ঋণ এনবিএফআই খাতের সামগ্রিক মুনাফায় উল্লেখযোগ্য নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে খাতটি মোট কর-পূর্ব লোকসান দিয়েছে ১ হাজার ২৮৪ কোটি টাকা, যা আগের বছরের তুলনায় ৪০০ কোটি টাকা বেশি। এছাড়াও এই সময়ে অন্যান্য পরিচালন আয় কমেছে ১৩.৩৭ শতাংশ।
২০২৩ সালের ডিসেম্বর শেষে এ খাতের নিট মুনাফা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় আরও কমেছে।