ইসরাইলি বাহিনী অধিকৃত গাজায় পরিকল্পিতভাবে জ্বালানি, বিশুদ্ধ খাবার-পানি, চিকিৎসা ও ওষুধ সামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। যার ফলে প্রাণ বাঁচাতে দূষিত খাবার ও পানি পান করতে বাধ্য হচ্ছেন গাজাবাসীরা। এতে উপত্যকাজুড়ে ব্যাপকভাবে প্রাণঘাতী হেপাটাইটিস ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
সম্প্রতি হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পদস্থ কর্মকর্তা সালেহ আল-হোমস এ দাবি করেন। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকায় জ্বালানি, চিকিৎসা ও ওষুধ সামগ্রী প্রবেশের ওপরও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইসরাইল।
এমন অবস্থায় সালেহ আল-হোমস গাজার হাসপাতালগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানি, চিকিৎসা ও ওষুধ সামগ্রীর ব্যবস্থা করার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক অধিদপ্তরও (ইউএনএইচসিআর) বলছে, ইসরাইলি সেনারা গাজায় যুদ্ধের মূলনীতিগুলো লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।
ইউএনএইচসিআর গাজার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করার কাজে যুদ্ধাস্ত্র ও বোমা ব্যবহার করার প্রতি ইঙ্গিত করে বলেছে, ইসরাইল গাজার সামরিক ও বেসামরিক ব্যক্তিদের মধ্যে কোনো পার্থক্য করছে না। বরং তাদের সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করে যাচ্ছে।
এর আগে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র আশরাফ আল-কুদরা উপত্যাকাজুড়ে সংকটাপন্ন অবস্থার কথা উল্লেখ করে বলছিলেন, দূষিত খাবার ও দূষিত পানি পানের কারণে গাজার ২৭ হাজার মানুষ হেপাটাইটিস-এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। ইসরাইল আসলে পরিকল্পিতভাবে গাজার স্বাস্থ্য খাতকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। দখলদার সেনারা গাজার প্রায় প্রতিটি হাসপাতালে হামলা চালিয়েছে এবং বেশ কয়েকটি হাসতালকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছে।
গত আট মাসের বেশি সময় ধরে গাজায় ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। সেই সঙ্গে উপত্যকাজুড়ে খাবার, পানি, ওষুধ ও জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিয়ে গাজাবাসীকে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখে ঠেলে দিয়েছে। এতে প্রায় ৫০ হাজার শিশু ও বৃদ্ধ রয়েছে মারাত্মক মৃত্যুঝুঁকিতে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গাজায় ইসরাইলি হামলায় এ পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৩৭ হাজার ৪শ ছাড়িয়েছে এবং আরও ৮৬ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা।