সেপ্টেম্বর ২২, ২০২৪ ৮:২৫ পূর্বাহ্ণ
সম্প্রতি লেবাননে ইসরাইলি হামলার নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান। তার দাবি, এ হামলা ইসরাইলের আঞ্চলিক সংঘাত সম্প্রসারণের উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রমাণ বহন করে।
এরদোগান জোর দিয়ে বলেন, ইসরাইল এখনও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর মতো হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
শনিবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেওয়ার আগে ইস্তাম্বুলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
লেবাননে পেজার বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে এরদোগান বলেন, ‘এ হামলার মাধ্যমে ইসরাইল প্রমাণ করেছে যে, বেসামরিক নাগরিকদের প্রতি তাদের কোনো সংবেদনশীলতা নেই এবং তারা তাদের ঘৃণ্য লক্ষ্য অর্জনের জন্য যে কোনো উপায় অবলম্বন করতে পারে’।
তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইসরাইল এ আক্রমণগুলোকে পুরো লেবানন এবং আশেপাশের অঞ্চলজুড়ে সম্প্রসারিত করছে এবং এতে কিছু পশ্চিমা দেশের সমর্থন রয়েছে।
তিনি এ সময় সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এ অঞ্চলটি (মধ্যপ্রাচ্য) বর্তমানে একটি ‘অবর্ণনীয় বিশাল সংকটের’ মুখোমুখি।
এ বিষয়ে তুর্কি নেতা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষত পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যাতে তারা ইসরাইলের এ ‘জঘন্য কর্মকাণ্ড’ দেখার বদলে প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ নেয়।
লেবাননে মঙ্গলবার ও বুধবার ‘পেজার’ এবং ‘আইকম’ নামক ওয়্যারলেস যোগাযোগ ডিভাইস বিস্ফোরণে অন্তত ৩৭ জন নিহত এবং ৩,২৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে।
এ বিষয়ে অবশ্য ইসরাইলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে অবরুদ্ধ গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিষয়ে শুক্রবার এরদোগান বলেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে তার ভাষণে তিনি বৈশ্বিক শাসনব্যবস্থার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেবেন। বিশেষ করে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক কাঠামো নিয়ে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায্য এবং কার্যকর কাঠামোর প্রয়োজনীয়তার কথা বলব’।
তিনি এ সময় উল্লেখ করেন যে, তিনি ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেবেন এবং আঞ্চলিক এবং মানবিক বিষয়গুলো নিয়ে তুরস্কের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন। বিশেষ করে তিনি গাজায় গণহত্যা এবং ইসরাইলের আগ্রাসী নীতির বিরুদ্ধে সাধারণ পদক্ষেপের বিষয়ে কথা বলবেন।
এছাড়াও এরদোগান জানান যে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের এ বছরের বৈঠকে ১৩০টিরও বেশি রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণের আশা করা হচ্ছে।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট জোর দিয়ে বলেন, গোটা বিশ্ব, বিশেষ করে জাতিসংঘের ওপর গুরুদায়িত্ব রয়েছে ইসরাইলি নিপীড়ন বন্ধ করার, স্থায়ী যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করার এবং মানবিক সাহায্য অবাধে প্রবাহিত করার।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সফরের সময় আমরা আবারও এ বিষয়গুলো আমাদের অংশীদারদের মনে করিয়ে দেব’।
‘নেতানিয়াহু ও তার নেটওয়ার্ক তাদের উগ্র জায়নবাদী মতাদর্শ বাস্তবায়নের জন্য উস্কানি ও প্ররোচনার আশ্রয় নিচ্ছে’ মন্তব্য করে এরদোগান বলেন, ‘আমাদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদে ক্রমবর্ধমান আক্রমণ ও হয়রানি একই নোংরা ষড়যন্ত্রের অংশ। তুর্কি মুসলমান হিসেবে আমরা এ বিষয়ে আমাদের সংবেদনশীলতার মাত্রা বারবার প্রকাশ করেছি। আজও আমাদের অবস্থান একই। এ অঞ্চলকে এক বিশাল বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ইসরাইলের ওপর চাপ আরও বাড়াতে হবে’।
এদিকে সিরিয়া ইস্যুতে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তুরস্ক ও সিরিয়ার সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আমরা বাশার আল-আসাদের সঙ্গে বৈঠক করার ইচ্ছা দেখিয়েছি। এখন আমরা তাদের প্রতিক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি’।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি