জলদস্যু কবলিত বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ আজ সন্ধ্যায় সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ১৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে অবস্থান করছিল। জাহাজের এ অবস্থান সম্পর্কে আজ বুধবার রাতে নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএমওএ)।
গতকাল দুপুরে বাংলাদেশি ২৩ ক্রুসহ এমভি আব্দুল্লাহ জাহাজের দখল নেয় সোমালি জলদস্যুরা। পরে তারা ক্রুদের জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে।
জাহাজের সবশেষ অবস্থানের ছবি। বাংলাদেশ মার্চেন্ট মেরিন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সৌজন্যে
জাহাজটিকে প্রায় ৫ থেকে ১১ নটিক্যাল মাইল গতিতে সোমালিয়ার দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল দস্যুরা।
বিএমএমওএ সাধারণ সম্পাদক মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, জাহাজটি আজ সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটে সোমালিয়ার উপকূল থেকে প্রায় ১৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল এবং এর গতি বেড়েছে।
তিনি বলেন, একটি আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানি থেকে জাহাজের সর্বশেষ অবস্থানের ছবি পাঠিয়েছে আমাদের কাছে।
ছবিতে দেখা গেছে, জাহাজটি সোমালিয়ার গারাকাদ বন্দরের দিকে যাচ্ছে। গত ৫ ঘণ্টায় জাহাজের গতি বেড়েছে। সম্ভবত জোয়ারের কারণে গতি বেড়েছে।
সাখাওয়াত বলেন, জাহাজের বর্তমান গতি প্রায় ১৪ নটিক্যাল মাইল। এ গতিতে চললে জাহাজটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যে সোমালিয়ায় নোঙর করবে।
জাহাজটি চট্টগ্রামভিত্তিক কবির স্টিল অ্যান্ড রি-রোলিং মিলের (কেএসআরএম) সহযোগী সংস্থা এসআর শিপিং লাইনসের। জাহাজটি ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা বহন করছিল।
প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানান, জাহাজটি আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরের দিকে যাচ্ছিল। এ সময় জলদস্যুরা জাহাজের দখল নেয়।
জাহাজ ও ক্রুদের উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেছেন, জলদস্যুদের সঙ্গে এখনো যোগাযোগ করা যায়নি। সরকার সেকেন্ড পার্টির মাধ্যমে চেষ্টা করছে যোগাযোগের।
কেএসআরএম গ্রুপের মোট ২৩টি জাহাজ আছে, যেগুলো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক রুটে চলাচল করছে। গোল্ডেন হক নামে পরিচিত এমভি আবদুল্লাহ গত বছর কেএসআরএম গ্রুপের মালিকানায় আসে।
এ প্রতিষ্ঠানের অধীনে এসআর শিপিংয়ের এমভি জাহান মনি নামের জাহাজ ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভারতের উপকূলে আরব সাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল।
ঐ জাহাজের ২৫ ক্রু এবং প্রধান কর্মকর্তার স্ত্রী জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হন। প্রায় ১০০ দিন জিম্মি থাকার পর তাদের উদ্ধার করা হয়।