খেলাপি ঋণ আদায়ে এবার আরও ছাড়

খেলাপি ঋণ আদায়ে এবার আরও ছাড়

অর্থনীতি স্লাইড

জুলাই ৯, ২০২৪ ৯:০৭ পূর্বাহ্ণ

ঋণ আদায় বাড়াতে ও খেলাপি ঋণ কমাতে এবারও ঋণখেলাপিদের আরও ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে আগের মতো এবার বড় ছাড় দেওয়া হয়নি। সীমিত আকারে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ঋণের মোট বকেয়ার কমপক্ষে ১০ শতাংশ অর্থ জমা দিয়ে এই সুবিধা নেওয়ার জন্য আবেদন করতে হবে। ৩ বছরের মধ্যে পুরো ঋণ শোধ করতে হবে।

ব্যাংক বিদ্যমান নীতিমালার আওতায় গ্রাহকের সুদ মওকুফ করতে পারবে। বিশেষ পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হবেন শুধু তারাই এ সুবিধা পাবেন। কোনো ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি এই সুবিধা পাবেন না। এ বিষয়ে সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে একটি সার্কুলার জারি করা হয়; যা বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। এতে বলা হয়, এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।

সূত্র জানায়, এর আগেও ঋণখেলাপিদের ছাড় দিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বিভিন্ন নীতিমালা জারি করা হয়েছে। মূলত খেলাপি ঋণ আদায় বাড়াতে এ ছাড় দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে আদায় বাড়েনি। অথচ এভাবে খেলাপি ঋণ নবায়ন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে খেলাপি ঋণ কমানো সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করা হয়। ব্যাংকাররা মনে করেন, এই নীতিমালার মাধ্যমেও খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কিছুটা হলেও কমানো সম্ভব হবে। তবে ঋণ আদায় তেমন একটা বাড়বে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবার প্রকৃত পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হচ্ছেন বা যারা তাদের ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চান, তাদের ঋণ পরিশোধের জন্য একটি নতুন নীতিমালা করেছে। এর আওতায় সংশ্লিষ্ট গ্রাহকদের ঋণের দায় থেকে কিছু ছাড় দিয়ে বের হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এ সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়, পরিস্থিতির কারণে যেসব ঋণগ্রহীতা খেলাপি হচ্ছেন তাদের খেলাপি ঋণ এই নীতিমালার আওতায় নবায়ন করে আদায় করা যাবে। এ জন্য গ্রাহককে মোট ঋণের কমপক্ষে ১০ শতাংশ পরিশোধ করে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে আবেদন করতে হবে। ব্যাংক গ্রাহকের আবেদন ২ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করবে। গ্রাহককে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী সুদ মওকুফ সুবিধাও দেওয়া যাবে। ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ থেকে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। এর বেশি ঋণের ক্ষেত্রে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিতে হবে। ঋণের পুরো অর্থ পরিশোধের জন্য ২ বছর সময় দেওয়া যাবে।

গ্রাহকের প্রয়োজনে এর সীমা আরও ১ বছর বাড়ানো যাবে। মোট ৩ বছরের মধ্যে পুরো ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত জামানত ছাড় করা যাবে না। তবে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে এ বিষয়ে চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে। পুরো ঋণ পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত গ্রাহক খেলাপি হিসাবে চিহ্নিত হবেন।

নীতিমালায় আরও বলা হয়, এর আওতায় কোনো ইচ্ছাকৃত খেলাপি সুবিধা পাবেন না। পরিস্থিতির কারণে যারা খেলাপি হবেন তারা পাবেন। এছাড়া যারা ব্যবসা বা শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ করতে চান তারাও এই সুবিধা পাবেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এই নীতিমালার ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে একটি নীতিমালা করতে হবে। তবে কোনোক্রমেই এ নীতিমালার চেয়ে শিথিলযোগ্য শর্ত রাখা যাবে না। ওই নীতিমালা পর্ষদে অনুমোদন করতে হবে। এর ভিত্তিতে ব্যাংক এর বাস্তবায়ন করবে। এই নীতিমালার আওতায় ঋণ নবায়ন করা হলে তা ঋণ পুনর্গঠন বা পুনঃতফশিল হিসাবে বিবেচিত হবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *