নভেম্বর ৭, ২০২৩ ১০:২৮ পূর্বাহ্ণ
অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামলা শুরুর পর রোববার রাতে সবচেয়ে ভয়াবহ এবং তীব্র বিমান হামলা পরিচালনা করেছে ইসরাইল। ৩১ তম দিনের এ হামলার পর গাজায় নিতদের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) বলছে গাজায় হামাসের বিভিন্ন স্থাপনা তারা নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে এবং গাজাকে কার্যত দুই অংশে বিভক্ত করে ফেলেছে। এ অবস্থায় খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ, জাতিসংঘের ১৮ সংস্থা গাজায় ‘অনতিবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতির’ আহ্বান জানিয়েছে। খবর আল-জাজিরা, রয়টার্স, এপি, বিবিসির।
সোমবার গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, রোববার রাতভর ইসরাইলি বিমান হামলায় ২৫২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর ফলে ইসরাইলি হামলায় গাজা উপত্যকা ও পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনিদের নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১০ হাজার ২২ জনে পৌঁছেছে। নিহতদের মধ্যে ৪ হাজার ১০৪ জনই শিশু ও ২৬৪১ জন নারী। ইসরাইলের এ হামলায় ফিলিস্তিনে আহত হয়েছে আরও অন্তত ২৫ হাজার ৪০৮ জন।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, গাজায় এর ত্রাণ বিষয়ক সংস্থার ৮৮ জন কর্মী নিহত হয়েছে। এর আগে আর কোনো একক সংঘাতে জাতিসংঘের এত সদস্যের প্রাণহানি ঘটেনি।
৩১ দিন ধরে চলমান এই যুদ্ধের অবসানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা আহ্বান জানালেও তাতে কর্ণপাত করছে না ইসরাইল। ইসরাইলের স্থল বাহিনী গাজা উপত্যকাকে দুই ভাগে বিভক্ত করে হামলা পরিচালনা করছে। গাজা নগরীকে চার দিক থেকে ঘিরে স্থল, আকাশ ও সমুদ্র থেকে হামলা চালাচ্ছে আইডিএফ। উত্তর গাজা থেকে দক্ষিণের দিকে যাওয়ার সময় ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে ইসরাইল বিমান হামলা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
আইডিএফ মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি বলেছেন, সেন্যরা গাজায় প্রবেশ করে উপকূল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ফলে কার্যত তারা গাজা উপত্যকাকে উত্তর গাজা এবং দক্ষিণ গাজায় বিভক্ত করে ফেলেছে। দুই-একদিনের মধ্যেই গাজার ভেতরে সেনাবাহিনী লড়াই শুরু করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইসরাইলের গণমাধ্যমে বলা হয়েছে দীর্ঘ দিনের প্রস্তুতি নেওয়া সেনাবাহিনী এবার গাজার রাস্তায় রাস্তায় যুদ্ধে লিপ্ত হবে। এতে হতাহতের সংখ্যা অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এদিকে, জাতিসংঘের ১৮টি সংস্থার প্রধানরা বিরল এক যৌথ বিবৃতিতে ২৪ লাখ মানুষের গাজা উপত্যকায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। সংস্থাগুলোর নেতারা রোববার বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের অবিলম্বে মানবিক যুদ্ধবিরতি দরকার। ৩০ দিন হয়ে গেছে। যথেষ্ট হয়েছে। এটা এখনই বন্ধ করতে হবে।’ জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরাইল এবং অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের পরিস্থিতি দেখছে বিশ্ব। সেখানে প্রতিনিয়ত প্রাণহানি এবং লোকজনের বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়ার ঘটনায় বিশ্ব হতবাক ও বিস্মিত। জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা, সেভ দ্য চিলড্রেনসহ বিভিন্ন সংস্থা দুপক্ষেরই প্রাণহানির কথা উল্লেখ করেছে। একই সঙ্গে হামাস যাদের জিম্মি করেছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছে।