বলিউডের ভাইজান খ্যাত অভিনেতা সালমান খানের বাড়িতে হামলার ঘটনায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করল মুম্বাই পুলিশ। প্রায় ৪ ঘণ্টা ধরে পুলিশের সঙ্গে কথা হয় অভিনেতার। তবে শুধু সালমানই নন, গুলিবর্ষণের ঘটনায় তার ভাই আরবাজেরও বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। খবর দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
সালমান খান পুলিশকে জানান, গুলির শব্দ শুনে তিনি জেগে উঠেছিলেন। কী হচ্ছে দেখার জন্য গ্যালারিতে গিয়ে দেখেন বাইরে কেউ নেই। কিছুক্ষণ পর ভবনে নিয়োজিত নিরাপত্তারক্ষীরা তার বাড়ির কাছে যান এবং বাইরে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করেন। বিবৃতিতে ভাইজান পুরো ঘটনা বর্ণনা করেছেন এবং প্রকাশ করেছেন যে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং তাঁকে অন্যায়ভাবে টার্গেট করেছে।
পুলিশকে দেওয়া বয়ানে আরবাজ বলেছেন, ‘এর আগে কেউ একটা হুমকি চিরকুট রেখে গিয়েছিল যা বাড়ির বাইরে পাওয়া গিয়েছিল এবং বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্যরা পানভেলের ফার্মহাউসে রেকি করেছিল। এটি (গুলিবর্ষণ) তৃতীয় ঘটনা এবং পুলিশের এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।’
প্রসঙ্গত, গত ১৪ এপ্রিল সালমানের বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে এর দায় স্বীকার করেছে বিষ্ণোই গ্যাং। গ্রেপ্তার হয়েছে একাধিক সন্দেহজনক অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে একজনের আবার হাজতেই মৃত্যু হয়। তার নাম অনুজ থাপন। এই মৃত্যুর সিবিআই তদন্ত চেয়ে বম্বে উচ্চ আদালতে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগপত্রে সালমান খানেরও নাম ছিল। পরে সেই নাম সরানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এই গোলাগুলির ঘটনার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই ভিকি গুপ্ত (২৪) ও সাগর পালকে (২১) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এখন তাঁরা ক্রাইম ব্রাঞ্চের হেফাজতে রয়েছেন। সূত্রের খবর, এই দুজনকে জেরা করেই তাপি নদীতে বন্দুক ও গুলি ফেলার কথা জানতে পারে পুলিশ। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় দুটি বন্দুক ও তিনটি ম্যাগাজিন। এপ্রিল মাসেই আবার পাঞ্জাব থেকে সোনু কুমার বিষ্ণোই ও অনুজ থাপনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপরই পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। হাজতে অনুজ থাপনের মৃত্যু হয়। শোনা যায়, আত্মহত্যা করেছে সে। যদিও এই তথ্য অনুজের পরিবার মানতে নারাজ। ছেলের মৃত্যুর তদন্ত সিবিআইকে দেওয়া হোক—এই আর্জি নিয়ে বম্বে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অনুজের মা রীতা দেবী। তাঁর আইনজীবীর দাখিল করা পিটিশনেই সালমান খানের নাম লেখা ছিল। এতে আপত্তি জানিয়েছে বিচারপতি রেবতী মোহিতে-দেরে ও শ্যাম ছন্দকের ডিভিশন বেঞ্চ।
যে মানুষটা নিজেই এই ঘটনায় ভুক্তভোগী তার নাম কেন পিটিশনে রাখা হয়েছে—প্রশ্ন দুই বিচারপতির। তার চেয়ে মূল বিষয়ের ওপর জোর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তারা। আর এই কারণেই সালমানের নাম এই মামলা থেকে সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্তে কিছুটা স্বস্তি পান সালমানের অনুরাগীরা।