এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ
তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ডের অংশ বলে দাবি করে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই চীন। বেইজিং তাইওয়ানে সরাসরি আক্রমণ না করলেও নানাভাবে চাপে রাখার চেষ্টা করছে সবসময়।
আবার এই বিষয়টিসহ নানা কারণে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বৈরিতা আছে। আর এই বৈরিতার সুফল যাচ্ছে তাইওয়ানের ঘরে। সর্বশেষ যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের জন্য বিপুল পরিমাণ সহায়তা প্যাকেজ অনুমোদন দিয়েছে।
তাইপের অন্যতম মিত্র বলা হয় ওয়াশিংটনকে। কূটনৈতিক সম্পর্কের বাইরেও তাইওয়ানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সমর্থক এবং অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। মূলত চীনকে মোকাবিলায় তাইওয়ানের জন্য মোটা অঙ্কের বৈদেশিক সহায়তা প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্যাকেজটির আওতায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে অস্ত্র সহায়তা পেতে যাচ্ছে তাইপে। বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে চীন।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কয়েক মাসের বিলম্ব ও বিতর্কের পরে তিন দেশের জন্য সহায়তা সংক্রান্ত বিলে স্বাক্ষর করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।
ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য ৮০০ কোটি ডলার বরাদ্দ করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
বিশ্লেষকরা বলছেন, কমিউনিস্ট চীনকে মোকাবিলা করার পাশাপাশি অঞ্চলটিতে শক্তিশালী প্রতিবন্ধকতা নিশ্চিতের প্রচেষ্টা হিসেবে সবচেয়ে বেশি অর্থায়ন করা হয়েছে অঞ্চলটির জন্য।
ফরেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের কনর ফিডলারের মতে, ইন্দো-প্যাসিফিকের জন্য বরাদ্দ করা প্রায় অর্ধেক অর্থই সরাসরি সাবমেরিন শিল্পকে শক্তিশালী করতে ব্যয় হবে। এ বিনিয়োগ ইন্দো-প্যাসিফিকে প্রতিবন্ধকতা বাড়াবে। তবে এর তাৎক্ষণিক প্রভাব যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। ফিডলারের মতে, এই অর্থের সিংহভাগ যুক্তরাষ্ট্রে ব্যয় করা হবে। দেশটির ৫০টি অঙ্গরাজ্যের প্রায় ১৬ হাজার সাবমেরিন সরবরাহকারী উপকৃত হবেন।
সহায়তা প্যাকেজের দুই বিলিয়ন ডলার তহবিল তাইওয়ান এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের অন্য অংশীদারদের জন্য বিদেশি সামরিক অর্থায়ন কর্মসূচির প্রতি নজর রেখে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, চীনের আগ্রাসনের মোকাবিলা করছে এসব দেশ বা অঞ্চল। মার্কিন কর্মকর্তাদের মতে, অর্থায়ন কর্মসূচির আওতায় মিত্রদেশকে মার্কিন প্রতিরক্ষা খাতে নিবন্ধন, পরিষেবা এবং প্রশিক্ষণ ক্রয়ের অনুমতি দেয় যুক্তরাষ্ট্র।
তাইওয়ান এবং অন্যান্য আঞ্চলিক অংশীদারদের প্রতিরক্ষাসংক্রান্ত ব্যয়ের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে প্রায় ১৯০ কোটি ডলার। এর মধ্যে ৫৪ কোটি ডলার ব্যয় করা হবে অঞ্চলটিতে মার্কিন সামরিক সক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার এসব প্যাকেজের সমালোচনা করে চীন বলছে, এ ধরনের তহবিল তাইওয়ানকে ‘বিপজ্জনক পরিস্থিতিতে’ ঠেলে দিচ্ছে। বেইজিংয়ের তাইওয়ানবিষয়ক কার্যালয় জানায়, এই সাহায্য চীনের প্রতি মার্কিন প্রতিশ্রুতি ‘গুরুতরভাবে লঙ্ঘন’ করে এবং ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির কাছে তাইওয়ানের স্বাধীনতার বিষয়ে ভুল সংকেত পাঠায়।