সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৪ ৭:০৬ পূর্বাহ্ণ
গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় অমানবিক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। শুধু হামলা করেই ক্ষান্ত হয়নি, পুরো উপত্যকাটিকে অবরুদ্ধ করেও রেখেছে তারা। সেনাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরাও।
ইসরাইলি বাহিনীর লাগাতার হামলায় চরম মানবিক সংকটও সৃষ্টি হয়েছে গাজায়। বোমাবর্ষণের কারণে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পুরো গাজা। একইভাবে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ক্ষুধার্ত মানুষের তালিকা।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, বিশ্বের ক্ষুধার্ত মানুষের ৮০ শতাংশই গাজার বাসিন্দা। সম্প্রতি জাতিসংঘের খাদ্য অধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক মাইকেল ফাখরি এ তথ্য জানিয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির উপকূলীয় অঞ্চলে ২৩ লাখ মানুষের বাস। যারা ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ও বিপর্যয়কর ক্ষুধার মুখোমুখি অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গাজার প্রত্যেক মানুষই এখন ক্ষুধার্ত। তাদের মধ্যে ৪ ভাগের ১ ভাগ মানুষ অনাহারে রয়েছেন।
ফাখরি বলেছেন, যুদ্ধের ইতিহাসে এরকম দ্রুতগতিতে কোনো জাতি দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধাপীড়িত হওয়ার রেকর্ড নেই। এ অঞ্চলে ২৩ লাখ ফিলিস্তিনির দুর্ভিক্ষপীড়িত হওয়ার ঘটনা নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। ৭৬ বছর আগে, অবৈধ ইসরাইল প্রতিষ্ঠার থেকে ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভিক্ষ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই সময় থেকেই ফিলিস্তিনি জনগণকে বাস্তুচ্যুত করার ইতিহাস শুরু হয়। তারপর থেকে ইসরাইল ফিলিস্তিনি জনগণকে ক্ষুধার্ত রাখার নীতির দিকে ঝুঁকেছে বলে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদক উল্লেখ করেছেন।
জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টেফান ডুজারিক সম্প্রতি গাজা উপত্যকার মানুষকে সাহায্য করার জন্য জাতিসংঘের ত্রাণ ও কর্ম সংস্থা আনরাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার ওপর জোর দিয়েছেন। মুখপাত্র আরও বলেছেন, গাজার মানবিক পরিস্থিতি বিপর্যয়কেও ছেড়ে গেছে। খাদ্য সহায়তা বিতরণের পরিমাণ জুলাইয়ের তুলনায় ৩৫ শতাংশ কমে গেছে।
২০২৩ সালর ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকার ৮০ শতাংশ বাড়িঘর এবং অবকাঠামো মারাÍকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে নৃশংস অবরোধের কারণে নজিরবিহীন দুর্ভিক্ষ ও ক্ষুধায় গুরুতর মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রাণহানির আশঙ্কা রয়েছে বলেও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্টেফান ডুজারিক।
এদিকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, গাজায় পাঁচ বছরের নিচে তিন লাখ ৩৫ হাজার শিশু রয়েছে। যারা অপুষ্টিতে ভুগছে। উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এতে পুরো একটি জেনারেশন অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়তে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু গাজায় নয়। ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরেও হামলা ও দখলদারিত্ব অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। পশ্চিম তীরে হামলার ঘটনায় পশ্চিমারা নিন্দা জানালেও অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে দেশগুলো।
সূত্র: ইরনা, পার্স টুডে