অক্টোবর ৬, ২০২৪ ৩:২৯ পূর্বাহ্ণ
টাইম ম্যাগাজিনের ২০২৪ সালের ‘টাইম-১০০’-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে দমনপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এক নারীর নাম। বিখ্যাত এই মানবাধিকার কর্মীর নাম মাহরাং বালুচ। প্রতি বছর বিশ্বের প্রভাবশালী ১০০ ব্যক্তির তালিকা প্রকাশ করে বিখ্যাত এই সাময়িকী।
টাইম ম্যাগাজিন লিখেছে, বেলুচদের মধ্যে আশা জাগানো এই নারী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে শান্তিপূর্ণ ইসলামাবাদ মিছিলের আয়োজন করেছিলেন। তাদের দাবি ছিল, পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি এবং নিহত স্বামী, পুত্র এবং ভাইদের জন্য ন্যায়বিচার।
উল্লেখ্য, বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার লড়াইয়ে বালুচ সম্প্রদায়ের শত শত মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। খবর ডন ও এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের।
টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাহরাং বালুচ বলেন, অনেক হুমকি আছে। অনেক নিপীড়ন আছে। আমি এই স্বীকৃতি উৎসর্গ করছি সকল বেলুচ নারী, মানবাধিকার রক্ষাকর্মী এবং জোরপূর্বক নিখোঁজ ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি।
২০০৯ সালের ডিসেম্বরে করাচির একটি হাসপাতালের বাইরে থেকে তার বাবা গাফফার লঙ্গোভে নিখোঁজ হওয়ার পর হঠাৎ করেই মাহরাং লাইমলাইটে আসেন।
তখন তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী ছিলেন। ছয় ভাইবোনের মধ্যে বড় মাহরাং তার বাবাকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে কোয়েটা প্রেস ক্লাবের সামনে তার স্কুলের বই পুড়িয়ে প্রতিবাদ করেন। ২০১১ সালে তার বাবার ছিন্নভিন্ন লাশ পাওয়া যায়।
তার বাবা ছিলেন আজাদ বালুচিস্তান লড়াইয়ের রাজনৈতিক কর্মী। ২০১৭ সালে মাহরাংয়ের ভাইও অপহৃত হন। তারপরেই সক্রিয় মানবাধিকার লড়াইয়ে নামেন মাহরাং। ২০১৯ সালে মাহরাং বেলুচিস্তান ইয়েকজেঠি কমিটি স্থাপন করেন। সেই থেকে ছোট ছোট মিটিং-মিছিল করতে শুরু করেন তিনি।
বেলুচিস্তানের কালাতে জন্ম পেশায় ডাক্তার মাহরাংয়ের। বালুচ রেজিস্ট্যান্স মুভমেন্টেও যোগ দেন তিনি। তার লড়াই ছিল মূলত নিরুদ্দেশ, নির্বিচারে খুন হওয়া মানুষের পরিবারের পক্ষে এবং অন্যান্য মানবাধিকার রক্ষার লড়াই।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে ডা. মাহরাং জোরপূর্বক নিখোঁজের প্রতিবাদে ইসলামাবাদে বিশাল মিছিল ও অবস্থান ধর্মঘটের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।
গত জুলাইয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৪ সালের প্রথমার্ধে পাকিস্তানে মোট ১৯৭ জন নিখোঁজের ঘটনা ঘটেছে, যার বেশিরভাগই বেলুচিস্তানে রেকর্ড করা হয়েছে।
টাইম ম্যাগাজিনের এ তালিকায় আরও উল্লেখযোগ্য বাংলাদেশের ছাত্রনেতা নাহিদ ইসলাম এবং গাজার ফুড ব্লগার হামাদা শাকৌরা।