প্রবল শক্তিশালী টাইফুন গেইমি আছড়ে পড়েছে তাইওয়ানে। এই দুর্যোগে ইতোমধ্যেই অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুই শতাধিকের বেশি মানুষ। এই ঝড় মোকাবেলার প্রস্তুতিতে বন্ধ রাখা হয়েছে তাইওয়ানের অর্থ বাজারগুলো, বহু ফ্লাইটের সূচি বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া দ্বীপ ভূখণ্ডটির সবচেয়ে বড় বার্ষিক সামরিক মহড়া বাতিল করা হয়েছে।
তাইওয়ানে আঘাত হানার আগে এই টাইফুন গায়েমির আঘাতে ফিলিপাইনে ১৩ জন নিহত হয়েছে। ফিলিপাইনের জাতীয় পূর্বাভাসদাতা বলেছেন যে এটি তাইওয়ানে স্থলভাগে যাওয়ার আগে একটি সুপার-টাইফুনে পরিণত হয়েছিল।
স্থানীয় সময় বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে টাইফুনটি তাইওয়ানের মূল ভূখণ্ডণ্ডে আঘাত হানে।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ঘণ্টায় প্রায় ২৪০ কিলোমিটার (১৫০ মাইল) পর্যন্ত বেগে ঝোড়ো হাওয়া নিয়ে টাইফুন গেইমি তাইওয়ানের পূর্ব উপকূলে আছড়ে পড়েছে। প্রবল শক্তিশালী এই টাইফুনটি দ্বীপ ভূখণ্ডটির হুয়ালিয়েন শহরের কাছে আঘাত হানে।
তাইওয়ান দ্বীপের আবহওয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আট বছরের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ঝড় গায়েমি বুধবার স্থানীয় সময় রাতে পূর্বাঞ্চলীয় উপকূল দিয়ে স্থলে উঠে এসেছে।
টাইফুনটির প্রভাবে দ্বীপটিতে মুষলধারে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। এরমধ্যেই সামরিক বাহিনীকে প্রস্তুত অবস্থায় রাখা হয়েছে বলে রয়টার্স জানিয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, প্রবল বৃষ্টির কারণে ভূমিধসের উচ্চ ঝুঁকি থাকায় বিরল জনবসতির পার্বত্য এলাকাগুলো থেকে আট হাজারেরও বেশি মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রায় সব আভ্যন্তরীণ ফ্লাইট ও ২২৭টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
জানা গেছে, তাইওয়ান প্রণালী অতিক্রম করার পর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা রাতের দিকে গায়েমি চীনের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ফুজিয়ানে আঘাত হানতে পারে।
স্ব-শাসিত দ্বীপটির সরকার জানিয়েছে, বৃহস্পতিবারও তাইওয়ানের অর্থ বাজার বন্ধ থাকবে, পাশাপাশি সব ধরনের কাজ ও স্কুলগুলোও দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ থাকবে।
তাইওয়ানের দুর্যোগ মোকাবেলা কেন্দ্র জানিয়েছে, ঝড়ের তোড়ে একটি গাছ উপড়ে পড়ে একজন ও এক ভবনের একটি অংশ গাড়ির ওপর পড়ে আরেকজন নিহত হয়েছেন। এর পাশাপাশি আরও ২২০ জন আহত হয়েছেন।
তাইওয়ানের প্রধানমন্ত্রী চো ইয়ুং থাই জরুরি মোকাবেলা কেন্দ্রে এক বৈঠকে বলেছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টা খুব কঠিন এক চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতে হবে।