এপ্রিল ২৮, ২০২৪ ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ
তাইওয়ান ঘিরে আবারও সামরিক মহড়া চালিয়েছে চীন। শনিবার ১২টি চীনা বিমান তাইওয়ান প্রণালির সংবেদনশীল মধ্যরেখার ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেনের বেইজিং সফর শেষ করতে না করতেই এ মহড়া চালাল দেশটি। শুক্রবার চীনে ব্লিঙ্কেনের সফর শেষ করার একদিন পরই এই ঘটনা ঘটল।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়া জানিয়েছে, শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় (স্থানীয় সময়) তারা ২২টি চীনা যুদ্ধবিমান শনাক্ত করেছে। এদের মধ্যে ১২টি যুদ্ধবিমান তাইওয়ানের উত্তর ও কেন্দ্রীয় মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে।
এতদিন এই উত্তর ও কেন্দ্রীয় মধ্যরেখা চীন এবং তাইওয়ানের অনানুষ্ঠানিক সীমানা হিসাবে কাজ করেছে। তবে তা এখন আর মানতে রাজি নয় বেইজিং। তাই নিয়মিত চীনা বিমান এই সীমা অতিক্রম করছে। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, যৌথযুদ্ধ মহড়া চালিয়েছে চীনারা। এই সময় যুদ্ধবিমানের সঙ্গে যুদ্ধজাহাজও ছিল। তবে তাইওয়ানের যুদ্ধবিমান ও জাহাজ যথাযথভাবে এর জবাব দিয়েছে। যদিও ঠিক কিভাবে এই জবাব দেওয়া হয়েছে তা জানানো হয়নি। বহু বছর ধরে গণতান্ত্রিকভাবে শাসিত তাইওয়ানকে নিজস্ব অঞ্চল হিসাবে দাবি করে আসছে চীন। তবে চীনের এমন দাবি বরাবরই প্রত্যাখ্যান করে আসছে তাইওয়ান সরকার।
বিশ্বমঞ্চে তাইওয়ানের সবচেয়ে বড় মিত্র যুক্তরাষ্ট্র। দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও তাইওয়ানে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র সরবরাহ করে ওয়াশিংটন। চীন সফরের সময় তাইওয়ান প্রণালিজুড়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করার কথা জানিয়েছেন ব্লিঙ্কেন। তবে তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এই সম্পর্ক ভালো চোখে না চীন। ফলে যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্কে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে তাইওয়ান। এদিকে বেইজিং সফর শেষ করেই চীনের ওপর অভিযোগ তুলেছেন ব্লিঙ্কেন।
চলতি বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত মার্কিন নির্বাচনে চীন হস্তক্ষেপ করতে চাইছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেছেন, আসন্ন মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার ও হস্তক্ষেপ করার চীনা প্রচেষ্টার প্রমাণ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যদিও এর আগে মার্কিন নির্বাচনে হস্তক্ষেপ না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক বছরের কম সময়ের মধ্যে এ নিয়ে দুবার চীন সফর করলেন। গত বছরের নভেম্বরে সান ফ্রান্সিসকোতে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও শি জিনপিং। তখন চীনের প্রেসিডেন্ট প্রতিশ্রুতি দেন, তার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করবে না।
আরটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে ব্লিঙ্কেন হুমকির সুরে বলেছেন, ওয়াশিংটন এরই মধ্যে ১০০টিরও বেশি চীনা সংস্থার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। দেশটির বিরুদ্ধে আরও নিষেধাজ্ঞা ও অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত রয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর হুমকির প্রতিক্রিয়ায় বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেছে, একদিকে ইউক্রেনকে বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দিচ্ছে, অন্যদিকে রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে স্বাভাবিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের অযৌক্তিক সমালোচনা করছে।