ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই: প্রধানমন্ত্রী

ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার ভাষা নেই: প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

জুলাই ২৬, ২০২৪ ৮:৪৬ পূর্বাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে গত ১৫ বছরে নির্মিত স্থাপনাগুলোতে যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে তাদের প্রতিহত করতে হবে। কোটা সংস্কার আন্দেলনকে পুঁজি করে দেশব্যাপী চালানো তাণ্ডবের সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার দেশের জনগণকে করতে হবে। আমি জনগণের কাছে ন্যায় বিচার চাই। এ ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দেওয়ার মতো আমার আর কোনো ভাষা নেই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর-১০ মেট্রো স্টেশনের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেল করার সময় অনেক বাধা-বিঘ্ন এসেছিল। সব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে আমরা নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই মেট্রোরেল করে দিয়েছি। আজ মেট্রোরেল বন্ধ। কারণ, এই স্টেশনের সিস্টেম সম্পূর্ণ ডিজিটাল ও ইলেকট্রনিক। এটা কতদিনে ঠিক হবে জানি না।

তিনি আরো বলেন, সরকার মেট্রোরেল করে দিয়েছিল রাজধানীবাসীর কষ্ট লাঘব, সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের জন্য। যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো সহজ করার জন্য। মেট্রোরেল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ঢাকার মানুষই কষ্ট পাবে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আবার ট্রাফিক জ্যামে পড়ে থাকতে হবে। যারা আবার জনগণকে সেই কষ্টের মাঝে ফেলেছে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। দেশবাসীকেই এর বিচার তাদের করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, এই বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দেশের দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোই নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। যেসব স্থাপনা মানুষের জীবনযাত্রা সহজ করেছিল, সেগুলোই বেছে বেছে ধ্বংস করা হয়েছে। উন্নয়নবিরোধী এসব কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের মানসিকতা কোন ধরনের?

সরকার প্রধান বলেন, মেট্রোরেল এবং স্টেশনগুলোর সার্ভিসসহ সবকিছুই আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। অন্যান্য দেশের তুলনায় আধুনিক ও দৃষ্টিনন্দন মেট্রোরেল করেছিলাম। ধ্বংসযজ্ঞ দেখেও বিশ্বাস হতে চায় না যে এই দেশের মানুষই এটা করতে পারে। কিন্তু সেই কাজটিই করা হয়েছে। এই মেট্রোরেলে কি আমি চড়বো? এটা তো জনগণের জন্য। তাহলে এটার ওপর এত ক্ষোভ কেন? আজ এই মেট্রোরেল নির্মাণকাজের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকের চোখে পানি।

প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ২০১৮ সালে যখন ছাত্ররা কোটাবিরোধী আন্দোলন করলো আমি সঙ্গে সঙ্গে সেটা মেনে নিয়ে কোটা বাতিল করে দিলাম। এর বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবার থেকে মামলা করা হলো। সরকারের জারি করা পরিপত্র হাইকোর্টে বাতিল হলো। সেটার বিরুদ্ধে সরকার আপিল করলো। সেই সময় হাইকোর্টের রায়কে স্থিতাবস্থা দিয়ে সবার বক্তব্য শুনে সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্ট সময় দিলেন। এরপর আমি আন্দোলনকারীসহ দেশবাসীকে বললাম ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সরকার আপিল করেছে, তাদের হতাশ হতে হবে না। আর আন্দোলনকারীদের ধৈর্যের সুযোগ নিয়েই নাশকতাকারীরা ১৭ জুলাই থেকে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ শুরু করলো।

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ’৭৫-এর পর ২৯ বছর এ দেশের মানুষ বঞ্চিত ছিল। আওয়ামী লীগ এসে জনগণকে উন্নত জীবন দেয়। খাদ্য নিরাপত্তা, বিদ্যুৎ, চিকিৎসা, রাস্তা-সেতুসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণের মাধ্যমে আমরা গত ১৫ বছরে মানুষের জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিলাম। আমি তো দেশের মানুষের জীবনমান উন্নত করতেই কাজ করে যাচ্ছি, যা কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। ২০০৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের কী অবস্থা ছিল? আর আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের একধাপ উপরে উঠে গেছে। সেখান থেকে আমাদের নামাতে হবে কেন?

শেখ হাসিনা বলেন, মেট্রোরেল যেন দ্রুত সময়ে হয় সেজন্য দিন-রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করেছি। এটাকে মতিঝিল-কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত করে দিয়েছি যেন মানুষ আরো সুন্দরভাবে চলতে পারে। দেশের মানুষ কত খুশি ছিল। যারা এই মেট্রোরেল ভাঙচুর করলো, জনগণের আনন্দ নষ্ট করলো তাদের বিচার এ দেশের জনগণকেই করতে হবে। আমি সেই বিচারের দিকে তাকিয়ে আছি। আমি এর নিন্দা জানানোর ভাষা পাচ্ছি না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *