নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্রের, যা বলল পাকিস্তান

নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন যুক্তরাষ্ট্রের, যা বলল পাকিস্তান

আন্তর্জাতিক

জুন ২৯, ২০২৪ ৮:৩৭ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি। দীর্ঘদিন পর দেশটির নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি এ বিষয়ে মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস একটি প্রস্তাবও পাস করেছে।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনা করার পাশাপাশি পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপ’ করার চেষ্টা করছে বলেও দাবি করেছে ইসলামাবাদ।

বুধবার (২৬ জুন) মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত হওয়া সাধারণ নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি প্রস্তাব পাস করেছে। এর কয়েক ঘণ্টা পরই যুক্তরাষ্ট্রকে নিজেদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ‘হস্তক্ষেপ’ করার চেষ্টা করার অভিযোগ করেছে পাকিস্তান। খবর আলজাজিরার।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাবটিতে পাকিস্তানের নির্বাচনে কথিত অনিয়মের বিষয়ে ‘পূর্ণাঙ্গ ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জানানো হয়েছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টিও নির্বাচনে তাদের জয়কে নস্যাৎ করার জন্য কারচুপি করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করেছে।

বুধবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মমতাজ জাহরা বালোচ বলেছেন, পাকিস্তান ‘গঠনমূলক আলোচনা’ এবং সংশ্লিষ্টতায় বিশ্বাস করে, তবে এই জাতীয় সিদ্ধান্তগুলো ‘গঠনমূলক বা উদ্দেশ্যমূলক নয়’।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এই বিশেষ রেজোলিউশনের সময় এবং প্রেক্ষাপট আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ইতিবাচক গতিশীলতার সঙ্গে ভালোভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনি প্রক্রিয়া সম্পর্কিত অসম্পূর্ণ বোঝাপড়া থেকে উদ্ভূত হয়েছে।’

এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফও এই প্রস্তাবের সমালোচনা করেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন, এই বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব আসন্ন নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য দেশটিকে আরও কিছু করতে হবে।

বুধবার এক টিভি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পাকিস্তানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার কোনো অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

এর আগে সামাজিকমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে খাজা আসিফ গাজায় চলমান যুদ্ধের সময় ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা উল্লেখ করার পাশাপাশি অতীতে বিদেশি সরকারগুলোকে ক্ষমতা থেকে অপসারণে জড়িত থাকার মার্কিন ট্র্যাক রেকর্ড নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

তিনি সেখানে লিখেছেন, ‘এমন একটি দেশ থেকে এই প্রস্তাব এসেছে যেটি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারগুলোকে উৎখাত করে বিংশ শতক কাটিয়েছে এবং বর্তমানে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাতে সহায়তা করছে।’

তিনি আরও লেখেন- ‘পাকিস্তানে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি সমর্থন প্রকাশ’ শিরোনামে এই প্রস্তাবটি গত ২৫ জুন কংগ্রেসে পেশ করা হয়েছিল। এই প্রস্তাবে ‘গণতান্ত্রিক ও নির্বাচনী প্রতিষ্ঠানগুলোকে সমুন্নত রাখতে’ এবং পাকিস্তানি জনগণের ‘মানবিক, নাগরিক বা রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের যেকোনও প্রচেষ্টার নিন্দা করার জন্য’ পাকিস্তান সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।’

প্রস্তাবটি কংগ্রেসের ৩৬৮ সদস্যের অপ্রতিরোধ্য সমর্থনে পাস হয় এবং এর বিপক্ষে মাত্র সাতটি ভোট পড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *