সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৩ ২:২৬ অপরাহ্ণ
জীবনযাপনের ভুল পদ্ধতির ফলেই পিসিওএস ও বন্ধ্যাত্বের মতো জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়। এ অসুখে সাধারণত মেয়েদের অনিয়মিত ঋতুস্রাব হয়। শরীরে এন্ড্রোজেন হরমোনের ক্ষরণ বেশি হওয়ায় ডিম্বাশয়ের চারপাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়। এ রোগের কারণে ৫০ শতাংশ মেয়েরা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। মেদ বেড়ে যায় সহজেই, শরীরের লোম দেখা দেয়, মাথার চুল ওঠে টাক পড়ে যাওয়ার প্রবণতাও বাড়ে।
পিসিওএস মেয়েদের সাধারণত ইনসুলিনের পরিমাণ কম থাকে। কিংবা তা পর্যাপ্ত থাকলেও সঠিক পরিমাণে কাজ করতে পারে না। ফলে রক্তের শর্করা মাত্রা অত্যাধিক বেড়ে যায়। তার থেকে ডায়াবেটিস, হৃদরোগের সমস্যা উচ্চরক্তচাপের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পিসিওএস থাকলে খাওয়া-দাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ আর ডায়েট মেনে চলতে হবে। ভাত রুটির মতো ক্যালরিবহুল খাবার কম খেয়ে শাকসবজি ডাল বেশি করে খাওয়া প্রয়োজন। মাটির নিচের সবজি, যেমন- আলু, গাজর, বিট এগুলো কম খাওয়াই ভালো। ফলের মধ্যে আম, কলা, লিচু, আঙুর বাদে যে কোনো ফল খেতে পারবেন। এছাড়া ভাজা, জাঙ্ক ফুড, প্রসেস করা খাবার যেমন কেক, পেস্ট্রি, চকলেট, পাউরুটি, বার্গার, ময়দার জিনিস সসেস, সালামির মতো খাবার ডায়েট থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। মিষ্টি আইসক্রিম বোতলের ঠান্ডা পানীয় জাতীয় খাবার পরিত্যাগ করবেন।
রেডমিটের বদলে, চিকেন খেতে হবে। মাছ, ডিম খেতে পারবেন। নানা রকম সবজির বীজ যেমন চিয়া সিড, কুমড়ার বিজ, সূর্যমুখীর বীজ খেতে পারবেন। হাই ফাইবার যুক্ত সবজি যেমন!-ফুলকপি, ব্রকলি, লেটুস পাতা, কুমড়া, বিন ইত্যাদি খাবেন। টমেটো, আপেল নানা রকম লেবু খেতে পারবেন। ময়দার বদলে লাল রুটি নিয়মিত খান। স্যাচুরেটেড ফ্যাটের বদলে সবসময় গুড ফ্যাট বেছে নিন। যেমন দিনে অল্প করে ঘি খেতে পারবেন। পিনাট বাটার বা আমন্ড বাটার এর মতো বাদাম থেকে তৈরি মাখন ব্যবহার করতে পারেন পাউরুটিতে।
তবে যাই খাবেন সেটাকে বার্ন করা সবচেয়ে জরুরি। হাঁটা, জগিং, সুইমিং এর মতো যে কোনো ব্যায়াম জ বেছে নিতে পারেন। সকালের রোদ লাগাতে হবে গায়ে। রাতে ঘুমাতে যেতে হবে ১১টার মধ্যে। দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে হবে এবং ভালো ঘুম হতে হবে। ওষুধ নয় জীবনযাপনে পরিবর্তনে আনবে পিসিওএস থেকে মুক্তি।
লেখক : ফার্টিলিটি কনসালটেন্ট ও গাইনোকোলজিস্ট, বিআইএইচএস জেনারেল হসপিটাল, মিরপুর-১, ঢাকা।