বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতের দুই রাজ্যে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেফতার ২

বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতের দুই রাজ্যে হামলা-ভাঙচুর, গ্রেফতার ২

আন্তর্জাতিক

আগস্ট ১২, ২০২৪ ৭:০৭ পূর্বাহ্ণ

ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে ভারতে গিয়ে উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদে অবস্থান নিয়েছেন শেখ হাসিনা। আর এই গাজিয়াবাদের সম্প্রতি হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, শুক্রবার ভারতের হিন্দু রক্ষা দল (এইচআরডি) নামে একটি সংগঠন কথিত বাংলাদেশিদের ওপর হামলার অভিপ্রায়ে গাজিয়াবাদের মধুবন বাপুধাম থানা এলাকার গুলধর রেল স্টেশনের পাশে বস্তিতে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ১৫/২০ জনের দল পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই বস্তিতে আগুন লাগিয়ে দেয়। মুসলিম নাম ও পরিচয় চিহ্নিত করে মারধর করতে থাকে।

এ বিষয়ে শনিবার গাজিয়াবাদের এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, এ ঘটনায় দুই মূল অভিযুক্ত এইচআরডি দলের প্রধান ভূপেন্দ্র তোমর ওরফে পিংকি চৌধুরী এবং বাদল ওরফে হরি ওমকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ঘটনার দায় স্বীকার করে পিংকি চৌধুরী বলেন, ‘আমার সঙ্গে এইচআরডি সদস্যরা এ ঘটনায় জড়িত ছিল। আমরা হামলার সম্পূর্ণ দায় স্বীকার করছি। আমরা আরও জানি যে, পুলিশ একটি এফআইআর নথিভুক্ত করেছে এবং একটি অনুলিপি আমাদের কাছে আছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে, সারা দুনিয়া নীরব রয়েছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বলছি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার বন্ধ করতে ব্যবস্থা নিতে।

তবে গাজিয়াবাদ পুলিশ জানায়, যাদের ওপর হামলা হয়েছে তারা কেউই বাংলাদেশি নয়, তারা শাহজাহানপুরের বাসিন্দা। এ ঘটনায় পিংকি চৌধুরিসহ কয়েকজনের নামে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে ভারতের ওড়িশায় বসবাসকারী বেশ কয়েকজন বাঙালি শ্রমিককে বাংলাদেশি সন্দেহে মারধর করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝিকে ফোন করেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফোনে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে জানিয়েছেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।

ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেছে, সাইকেলে মনোহারি সামগ্রী বিক্রি করা এক বিক্রেতাকে মারধর করছেন এক ব্যক্তি। বিক্রেতাকে তার আধার কার্ড দেখানোর নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। আধার কার্ড দেখাতে না পারায় চলছে মারধর।

নবান্ন সূত্রের বরাত দিয়ে আনন্দবাজার জানিয়েছে, বাংলাদেশের টালমাটাল পরিস্থিতির কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই ওড়িশা রাজ্যে বসবাসকারী কয়েকজন বাঙালি শ্রমিককে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে। বাংলাদেশি সন্দেহে তাদের মারধর করারও অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতির খবর পেয়েই ওড়িশার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মাঝিকে ফোন করেন মমতা। এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার অনুরোধ জানান পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।

খবরে বলা হয়েছে, ওড়িশা সরকারের মাধ্যমে ওই ভাসমান শ্রমিকদের পশ্চিমবঙ্গে ফিরে এসে এ রাজ্যেই কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মমতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *