ডিসেম্বর ৬, ২০২৩ ১০:৫০ পূর্বাহ্ণ
বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধের ওপর যে ২০ শতাংশ উৎস কর দিতে হতো, তা আগামী বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহতি দিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে, ৩০ নভেম্বর এনবিআর থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আয়কর আইন, ২০২৩ এর ধারা ৭৬ উপধারা (১) এর ক্ষমতাবলে অনিবাসীর অনুকূলে ঋণের সুদ পরিশোধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হতে বিদেশে প্রেরণকালে, উৎস কর কর্তন হতে শর্তসাপেক্ষে অব্যাহতি দেয়া হল। অব্যাহতির মেয়াদ ২০২৪ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। শর্তাবলির মধ্যে রয়েছে- আয়কর আইনের ধারা ১১৯ এর উপধারা (২) এর বিধান পরিপালন করতে হবে। এছাড়া ঋণের সুদ অগ্রিম পরিশোধের ক্ষেত্রে এই কর অব্যাহতি প্রযোজ্য হবে না।
চলতি অর্থবছরের বাজেটে বিদেশি ঋণের সুদ পেমেন্টের ওপর ২০ শতাংশ ‘উইথহোল্ডিং ট্যাক্স’ আরোপ করার বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য এনবিআরকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এনবিআরকে জানায়, এই কর বৈদেশিক উৎস থেকে ঋণ নেয়ার খরচ বাড়াবে। ফলে বিদেশি ঋণ নেয়ার খরচ এক-চতুর্থাংশ বেড়ে যাবে।
গত ৩১ আগস্ট পাঠানো একটি চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, এনবিআর এর আগে ১৯৭৬ সালের ২৯ নভেম্বর জারি করা একটি সার্কুলারের মাধ্যমে বিদেশি ঋণের সুদের ওপর কর মওকুফ করেছিল। তবে চলতি বছরের ২৩ মে একটি সার্কুলার জারির মাধ্যমে এই সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়। ফলে স্থানীয় ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং ইউনিট ও বায়ার্স ক্রেডিট দ্বারা পাওয়া বিদেশি ঋণের বিপরীতে সুদ পেমেন্টের ক্ষেত্রে এখন থেকে ২০ শতাংশ উৎস কর কাটা হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, শেষ পর্যন্ত ঋণগ্রহীতারাই এই অতিরিক্ত খরচ বহন করবে, বিদেশি ঋণদাতারা নয়। ফলে গ্রস-আপ ভিত্তিতে হিসাব করা হলে করের হার কার্যত ২৫ শতাংশ বাড়বে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো বলেছে যে, বিদেশি ঋণের সুদের হার এরই মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে এবং নতুন আরোপিত কর এই ঋণগুলোকে আরো ব্যয়বহুল করে তুলবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠিতে বলা হয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণের সুদহার এবং বিনিময় হারের ঝুঁকির কারণে অফশোর ব্যাংকিং ইউনি, কর্পোরেট ও আমদানিকারকরা বিদেশি ঋণ নিতে নিরুৎসাহিত হবে, যা টাকার তারল্য ও বিনিময় হারের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে।