বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কার্যনির্বাহী সভায় গত ১২ ফেব্রুয়ারি বিশ্বকাপ ব্যর্থতায় গঠিত মূল্যায়ন কমিটি প্রতিবেদন জমা দেয়। সেদিন প্রতিবেদনের অনুলিপি বোর্ড পরিচালকদের দেওয়া হয়নি। ভবিষ্যতে দেওয়া হবে, এমন নিশ্চয়তাও নেই।
কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিশ্বকাপ দলে অস্থিরতা তৈরিতে দুই পরিচালককে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ক্রিকেটাররা। যা অস্বস্তিতে ফেলেছে বিসিবির পরিচালক এনায়েত হোসেন সিরাজের নেতৃত্বে গঠিত পারফরম্যান্স মূল্যায়ন কমিটিকে।
ধারণা করা হচ্ছে অভিযুক্ত দুই পরিচালককে লজ্জার হাত থেকে বাঁচাতে প্রতিবেদনের অনুলিপি দেওয়া হয়নি। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টি চেপে যান বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনও। এক প্রতিবেদনে এসব তুলে এনেছে দেশের প্রথম সারির এক জাতীয় দৈনিক।
গত বছর ভারতের হওয়া বিশ্বকাপে চরমভাবে ব্যর্থ হয় বাংলাদেশ। কারণ অনুসন্ধানে এক মাসেরও বেশি সময় দলে বিশ্বকাপে দলের সঙ্গে থাকা সকলের সাক্ষাৎকার নেয় মূল্যায়ন কমিটি। যার শুরুটা হয় বিশ্বকাপের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ সুজনকে দিয়ে।
এরপর একে একে ক্রিকেট অপারেশন্সের চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস, সাবেক প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু এবং সাবেক নির্বাচক হাবিবুল বাশারের সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। বাদ ছিলেন না কোচিং স্টাফ ও ক্রিকেটাররাপ। সবার শেষে কমিটির সঙ্গে কথা বলেন সাকিব আল হাসান।
বিশ্বকাপ স্কোয়াডে না থাকলেও তামিম ইকবালকেও মুখোমুখি হতে হয় মূল্যায়ন কমিটির। বিসিবি সভাপতি আর তামিম ইকবালের মধ্যে মতভেদ তৈরির পেছনে চন্ডিকা হাথুরুসিংহের দায় খুঁজে পেয়েছে মূল্যায়ন কমিটি। বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তামিমের না থাকা, দলের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে বলে কমিটিকে জানিয়েছে একাধিক অভিজ্ঞ ক্রিকেটার।
ক্রিকেটার বা কোচিং স্টাফ- কেউ বিশ্বকাপে ব্যর্থতার দায় নিজেদের কাঁধে নেয়নি। আর এই বিষয়টি প্রতিবেদনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে মূল্যায়ন কমিটি। একে অন্যের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছে বিশ্বকাপের টিম ম্যানজেমেন্ট।
ভারতে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে প্রতি ম্যাচে ব্যাটিং অর্ডার পরিবর্তন করে বাংলাদেশ দল। এ জন্য দল হিসেবে ভালো খেলতে পারেনি টাইগাররা। এতে মত দিয়েছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা ক্রিকেটারদের একাংশ। মূল্যায়ন কমিটির প্রতিবেদনে ব্যর্থতার কারণ হিসেবে এটিকেও বেশ গুরুত্বসহকারে দেখানো হয়েছে।
বিশ্বকাপ দলের অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের ইচ্ছেতেই এমন পরিবর্তন হয়েছে বলে মূল্যায়ন কমিটিকে জানিয়েছেন হাথুরুসিংহে। অন্যদিকে সাকিবও মূল্যায়ন কমিটিকে জানান, প্রধান কোচের কথায় ব্যাটিং অর্ডারে পরিবর্তন করা হয়।
তবে মজার বিষয় হচ্ছে সকলে একটি বিষয়ে একমত হয়েছে। সেটি হচ্ছে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদকে প্রধান কোচ হাথুরুসিংহের চড় মারা বিষয়টি। ক্রিকেটার, টিম ম্যানেজম্যান্ট, পরিচালক বা কোচিং স্টাফের কেউই মূল্যায়ন কমিটিকে কোনো তথ্য দেয়নি।