নভেম্বর ৮, ২০২৩ ১০:৪৮ পূর্বাহ্ণ
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের আসন্ন ভারত সফর নিয়ে ঢাকায় ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুব্রামনিয়াম জয়শঙ্করসহ দেশটির অপরাপর উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। ওই বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আলোচনা হয় কি না, সেটি জানতে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে ঢাকা। ব্লিংকেন ও অস্টিনের সফরের এজেন্ডায় অবশ্য বাংলাদেশ প্রসঙ্গের উল্লেখ নেই। তবে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে অনানুষ্ঠানিকভাবেও প্রসঙ্গটি আলোচিত হলে তা হবে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রসহ তাদের মিত্র দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা দৌড়ঝাঁপ করছেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংলাপ করার এই প্রচেষ্টায় কূটনীতিকরা অন্য অংশীদারদের পাশাপাশি ভারতের সহায়তা চাইছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্লিংকেন ও অস্টিনের এটি আঞ্চলিক সফরের অংশ হলেও একই সময়ে ঢাকা থেকে পশ্চিমা কূটনীতিকদের প্রতিনিধি ভারত সফর করতে পারেন বলে নির্ভরযোগ্য কূটনৈতিক সূত্রে আভাস মিলেছে। এদিকে বাংলাদেশে চলমান সহিংসতাকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার ওয়াশিংটনে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল এ কথা বলেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এশিয়া সফরের এটি হলো গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের এই সফরের আলোচনার অন্যতম কেন্দ্রীয় বিষয় হলো ইন্দো-প্যাসিফিককে অবাধ, উন্মুক্ত, সমৃদ্ধ এবং নিরাপদ রাখার বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা। নেতারা ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে সংঘাত এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ নিয়েও আলোচনা করবেন। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের চারজন ক্যাবিনেট কর্মকর্তা এবং দুইজন মন্ত্রী তাদের ভারতীয় সমকক্ষের সঙ্গে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে এগিয়ে নেওয়ার পদক্ষেপ, পরিচ্ছন্ন জ্বালানি, সন্ত্রাস দমন, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, মহাকাশ এবং সেমি কন্ডাক্টর ম্যাটিফ্যাকচার্স নিয়ে আলোচনা করবেন।
এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনি পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যুক্তরাষ্ট্র। যে কোনো সহিংসতার ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্র অবিশ্বাস্য রকম গুরুত্বের সঙ্গে নেয়। বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাতে আমরা সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্য অংশীদারগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি ও থাকব।
বিএনপির কার্যালয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কথিত উপদেষ্টা মিয়া আরেফির ব্রিফিং, বাইডেনের সঙ্গে তার ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগের দাবি, রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে অবতার হিসাবে অভিহিত করার প্রসঙ্গও উঠে ব্রিফিংয়ে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখ্য উপমুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের নেতৃত্বে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসে অবিশ্বাস্য মেধাবী কর্মীদল আছে। রাষ্ট্রদূত হাসের শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো অঞ্চলের বিষয়েই দক্ষতা, অভিজ্ঞতা আছে। বিএনপির চলমান আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির প্রতি যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন জানাবে কি না জানতে চাইলে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, এটি মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশে কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ কোনো সমর্থন নেই।
যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশগুলো বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন প্রত্যাশা করে। সূত্রমতে, বাংলাদেশে ভালোমানের নির্বাচনের ব্যাপারে ভারতও একমত বলে কূটনৈতিক চ্যানেলে ঢাকাকে অবহিত করেছে দিল্লি।