সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৩ ১০:০১ পূর্বাহ্ণ
মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় আগামী মাসেই নামছে এমআরটি (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট) পুলিশ। ২৮ ডিসেম্বর মেট্রোরেলের উত্তরা উত্তর অংশ থেকে আগারগাঁও অংশ উদ্বোধনের পর থেকে এর নিরাপত্তা দিচ্ছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। সামনের মাসেই আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের সম্ভাবনা রয়েছে। এরপরই শুরু হবে এমআরটি পুলিশের অপারেশনাল কার্যক্রম। দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণ শুরু করেছেন এমআরটি পুলিশ সদস্যরা। ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) ট্রেনিং সেন্টার এবং উত্তরা দিয়াবাড়ী ডিএমপি পুলিশ লাইন্সে মৌলিক প্রশিক্ষণ চলছে। এই প্রশিক্ষণের আওতায় প্রতি ব্যাচে ৪০ জন যুক্ত থাকছেন। সাত দিন মেয়াদি এ প্রশিক্ষণ শিগগিরই সম্পন্ন হবে। এমআরটি পুলিশের সংশ্লিষ্ট সূত্র গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বর্তমানে মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় ডিএমপির প্রায় সাড়ে পাঁচশ সদস্য কাজ করছেন। বিশেষায়িত ইউনিট হিসাবে এমআরটি পুলিশ দায়িত্ব নেওয়ার পর ডিএমপি তাদের কার্যক্রম গুটিয়ে নেবে। ২১ মে এমআরটি পুলিশের জন্য একজন ডিআইজির নেতৃত্বে বিভিন্ন পদবির ২৩১ জনবল মঞ্জুর করে সরকার। ইতোমধ্যে ডিআইজি জিহাদুল কবিরের নেতৃত্বে এই বাহিনীর প্রশাসনিক ও অবকাঠামোগত কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট থেকে বাছাই করে যোগ্যতাসম্পন্ন পুলিশ সদস্যদের এমআরটি পুলিশে পদায়ন করা হয়েছে। তবে যে জনবল মঞ্জুর করা হয়েছে, তা মেট্রোরেলের নিরাপত্তায় পর্যাপ্ত না। তাই নতুন এই ইউনিটে আরও জনবল পদায়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
জানা যায়, এ মুহূর্তে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এমআরটি পুলিশের কার্যক্রম চলছে। শিগগিরই এমআরটি পুলিশের প্রধান কার্যালয় স্থানান্তর হবে উত্তরার দিয়াবাড়ীতে। ডিএমটিসিএল ডিপো রোলিং স্টক ভবনে হবে এ কার্যালয়।
পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (প্রশাসন) কামরুল আহসান বলেন, অনুমোদিত ২৩১ জনের জনবল দিয়ে যাত্রী, লাইন, স্টেশনসহ মেট্রোরেলের সবকিছুর নিরাপত্তা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে। এ মুহূর্তে আংশিকভাবে মেট্রোরেল চলছে। এ অবস্থায়ই ডিএমপির পাঁচ শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করছেন। উত্তরা থেকে মতিঝিল পুরোদমে চালু হলে ১৭টি স্টেশনে নিরাপত্তা দেখভাল করতে হবে। রূপগঞ্জসহ অন্যান্য স্থান থেকে মেট্রোরেল চালু হলে স্টেশনের সংখ্যা আরও বাড়বে। এসব বিষয় মাথায় রেখেই জনবল বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
এমআরটি পুলিশের প্রধান ডিআইজি জিহাদুল কবির গণমাধ্যমকে বলেন, মেট্রোরেল, মেট্রোরেলের যাত্রী, এমআরটি স্থাপনা, স্টেশন, ডিপোসহ অধিভুক্ত এলাকার নিরাপত্তা দিতে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। প্রাথমিকভাবে আমরা কেবল অপারেশনাল কার্যক্রম চালাব। কোনো ঘটনা ঘটলে সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দেব। আপাতত থানা পুলিশই তদন্ত করবে। তিনি বলেন, এমআরটি পুলিশের বিধিমালা তৈরির কাজ চলমান।
বিধিমালা পাশ হওয়ার পর তদন্ত কার্যক্রমে যুক্ত হবে এমআরটি পুলিশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আদলে মেট্রোরেলের নিরাপত্তাব্যবস্থা সাজানো হচ্ছে।
এমআরটি পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ব্যারাক বা থাকার বিষয়ে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দিয়াবাড়ীতে এমআরটি পুলিশের ব্যারাক তৈরির বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। যেহেতু এটি একটি নতুন ইউনিট, তাই নিজস্ব পোশাক নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। নিরাপত্তা প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশন কেপিআই (কি পয়েন্ট ইনস্টলেশন)-এর অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া মেট্রোরেল একটি অত্যাধুনিক গণপরিবহণ। তাই নিরাপত্তাব্যবস্থা মনিটরিংয়ের জন্য প্রতিটি স্টেশনে এমআরটি পুলিশের একটি কক্ষ থাকবে। সেখান থেকে নিরাপত্তাব্যবস্থা এবং দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের কার্যক্রম মনিটরিং করা হবে। কেন্দ্রীয়ভাবে সিসিটিভির মাধ্যমে সবকিছু মনিটরিং করা হবে।