অক্টোবর ১৭, ২০২৩ ১০:০৫ পূর্বাহ্ণ
হামাস অভিযানের পর থেকেই ফিলিস্তিনের ওপর চরম খ্যাপেছে ইসরাইলি বাহিনী। একের পর এক আক্রমণ চালাচ্ছে। করুণ অবস্থায় দিন পার করছেন গাজার বেসামরিক নাগরিকরা।
গাজাবাসী ছাড়াও ইসরাইলিদের হয়রানির শিকার জেরুজালেমের ফিলিস্তিনি বাসিন্দারা। হামাস অভিযানের পর জেরুজালেমের ‘ওল্ড সিটি’তে ইসরাইলি বাহিনীর উত্ত্যক্তের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। পূর্ব জেরুজালেমের প্রাচীরঘেরা এলাকাটির প্রবেশপথে প্রতিনিয়ত তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হচ্ছে তরুণ ফিলিস্তিনিরা। শুধু শারীরিক নয়, মানসিকভাবেও হেনস্তা করা হচ্ছে তাদের।
ব্যক্তিগত ফোন তল্লাশির পাশাপাশি শক্তিপ্রয়োগও করে থাকে ইসরাইলি বাহিনী। জিজ্ঞাসাবাদের নামে অশ্লীল মন্তব্য ও অপমান করছে। স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত গোপনিয়তায়ও হস্তক্ষেপ করছে। এককথায় নিজেদের খেয়াল-খুশিমতো যা ইচ্ছে তাই করছে ইসরাইলি বাহিনী। এমনটাই জানিয়েছেন ওল্ড সিটির বাসিন্দা শারি। আলজাজিরা।
জেরুজালেমের ‘ওল্ড সিটি’তে সবচেয়ে বেশি হয়রানির শিকার হচ্ছেন তরুণ ফিলিস্তিনিরা। অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের বার্গার রেস্তোরাঁয় কাজ করেন শারি (২৪)। কাজ সেরে প্রায় প্রতিরাতেই তাকে বাসায় ফিরতে হয়। কিন্তু বাড়ি ফেরার সময়ের ভোগান্তি তার কাছে রীতিমতো ভীতিকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শারি বলেন, সেনারা এখন যা মনে চায় তা-ই বলেন। কখনো তারা জোরে চিৎকার করেন। পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন। জবাবে কিছু বললেই আপনাকে নিয়ে সোজা থানায় চলে যাবেন তারা।
শারি আরও বলেন, হামাসের হামলার আগে ইসরাইলি বাহিনীর নিয়মিত হয়রানি তবুও সহনীয় ছিল। এবার যা হচ্ছে তা একেবারেই অসহনীয়। ফিলিস্তিনি তরুণদের অধিকাংশই বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ এবং টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত থাকে। সেসব গ্রুপে চলমান যুদ্ধ নিয়ে বিভিন্ন তথ্য এবং ইসরাইলবিরোধী মন্তব্য থাকে। সেসব ব্যক্তিগত ফোন জব্দ করে অত্যাচার চালানো হয়। ওল্ড সিটির প্রাচীরঘেঁষে বাড়ি ফিরছিলেন ২৩ বছর বয়সি আদনান বারাক।
তিনি জানান, বাড়ি যাওয়ার পথে প্রতিদিনই তিনি হেনস্তার শিকার হন। ওল্ড সিটির একজন ফিলিস্তিনি ট্যুর গাইড হামজা আফগানি (২৭)। অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি শারীরিক হয়রানির শিকার হয়েছেন তিনি। তার পরিবারের মহিলা সদস্যদেরও অবমাননা করা হয়েছে।
চলমান সংঘাতের কথা উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, আগে কথা বলার সুযোগ ছিল। কিন্তু এখন তারা (ইসরাইলি বাহিনী) আপনাকে আক্রমণকারী তকমা দিতে পারে। ইসরাইলি সেনারা জানে আমাদের (ফিলিস্তিনিদের) মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম। ফলে তারা আমাদের নারীদের নিয়ে মন্দ কথা বা অভিশাপ দিয়ে পুরুষদের উসকে দিতে চান। এতে কেউ উত্তেজিত হলে তাকে আক্রমণ করাটা আরও সহজ হয়।