গাজায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটির সম্মত হওয়ার পর এর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরাইল।
তারা জানিয়েছে, হামাসের এ ধরনের হালকা প্রস্তাব তারা গ্রহণ করবে না। সোমবার রাতে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরাইলি কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির যে প্রস্তাব হামাস অনুমোদন করেছে তা তারা গ্রহণ করবে না। ইসরাইলের ওই কর্মকর্তা হামাসের প্রস্তাবকে হালকা প্রস্তাব বলেও উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, মিসরের মধ্যস্থতায় হামাস সম্মত হওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সুদূরপ্রসারী সমাপ্তি রয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব ইসরাইল সমর্থন করবে না।
ইসরাইলের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমও একই তথ্য জানিয়েছে। তারা জানিয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতির বিষয়ে হামাসের চুক্তি ইসরাইল সরকার গ্রহণ করেনি।
এদিকে সোমবার হামাস নেতা খলিল আল–হায়া বলেছেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ব্যক্তিগতভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন মধ্যস্থতাকারীরা। ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে মধ্যস্থতা করছে মূলত কাতার ও মিসর।
সোমবার হামাসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, তাদের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানিকে ফোনে যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদনের বিষয়টি জানিয়েছেন। মিসরের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী আব্বাস কামেলকেও একই কথা বলেছেন তিনি।
গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তি বাইডেন প্রশাসনের অগ্রাধিকার তালিকার শীর্ষে রয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার। সোমবার তিনি বলেছেন, বর্তমানে যুদ্ধবিরতির চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা-সিআইএর প্রধান বিল বার্নস কাজ করছেন। বাইডেন প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায় থেকে সবাই এখন যুদ্ধবিরতির চুক্তির জন্য চেষ্টা করছেন।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাতদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।