অক্টোবর ১৯, ২০২৪ ৬:০৪ পূর্বাহ্ণ
দক্ষিণ-পশ্চিম নাইজেরিয়ার ইগবো-ওরা শহরে প্রতি বছর এক বিশেষ উৎসব উদযাপিত হয়, যা যমজ উৎসব নামে পরিচিত। উৎসবে পুরো শহর রঙিন সাজে সেজে ওঠে।
১১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত শহরের এ বার্ষিক যমজ উৎসবে, বিভিন্ন বয়সের যমজরা সেজেগুজে হাজির হন। তারা উৎসবে নিজেদের ঐতিহ্যবাহী নাইজেরিয়ান পোশাক পরে আসে, আর তা দেখে মনে হচ্ছিল যেন পুরো শহরটাই যমজদের সাজে সজ্জিত।
উৎসবে তারা একে অপরের সঙ্গে আড্ডা দেয়, হাসি-ঠাট্টা করে আর সবার মনে হয়—এটা শুধুমাত্র একটি উৎসব নয় বরং এক ধরনের যমজদের মহাকুম্ভ মেলা!
স্থানীয়রা যমজদেরকে সত্যিকার অর্থেই আশীর্বাদ মনে করেন। উৎসবে যোগ দেওয়া এক যমজ সন্তানের দাদি ওমোতুনমিওয়া ওলাদাপো বলেন, ‘যমজরা স্বর্গ থেকে আসে। বাবা-মা যখন একটি শিশুর কথা ভাবেন, তখন অপ্রত্যাশিতভাবে যমজ সন্তানের জন্ম হয়। যদিও ধনী ব্যক্তিরা যমজ সন্তানের জন্য কামনা করেন, কিন্তু যমজরা তো দরিদ্রদের বাড়িতে ঢুকতে ভালোবাসে। যাতে দরিদ্র মানুষেরা ঘরের ন্যাকড়াকে ভালো পোশাকে পরিণত করতে পারে’।
উৎসবে যমজ শিল্পীদের আকর্ষনীয় পরিবেশনা দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে। নাচ—গান, সবকিছু মিলিয়ে যেন উৎসবটা প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।
এবারের যমজ উৎসবে উপস্থিত ছিলেন ওরা রাজ্যের গভর্নর ও স্থানীয় রাজা ‘ওলু’। তিনি অনুষ্ঠানে যমজ সন্তান জন্মের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, ‘এ শহরের এমন কোনো বাড়ি নেই যেখানে আপনি অন্তত একটি যমজ সন্তান খুঁজে পাবেন না’।
নাইজেরিয়ার ইগবো-ওরা শহরটি পৃথিবীর ‘যমজ রাজধানী’ হিসেবে পরিচিত। কারণ এখানে যমজ সন্তানের জন্মের হার চমকপ্রদভাবে বেশি। বিশ্বব্যাপী ১ হাজারে ১২টি যমজ শিশুর বিপরীতে এ শহরে ৪৫ থেকে ৫০টি যমজ শিশু জন্মায়। যা সত্যিই বিস্ময়কর!
যমজদের এই উৎসব শুধু আনন্দের উপলক্ষ নয়, এটি গবেষকদের জন্যও আকর্ষণের একটি কেন্দ্রবিন্দু। তারা জানতে চান, কেন এখানে এত বেশি যমজ শিশু জন্মায়? কি কারণে এই বিশেষত্ব? প্রশ্নগুলো যেন গবেষকদের মাথায় গুনগুন করছে!
আর তাই এ উৎসব শুধু যমজ সন্তানের জন্মকেই বিশেষ করে তোলে না বরং স্থানীয় জনগণের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক আনন্দময় উদযাপন হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে!