জানুয়ারি ২২, ২০২৪ ১২:০০ অপরাহ্ণ
অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেছেন, আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে যেসব পণ্যের প্রয়োজন হয় সেগুলোর পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কেউ পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে দাম বাড়ানোর চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
রোববার বিকেলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আন্তমন্ত্রণালয়ের জরুরি সভা শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বিকেল পাঁচটার দিকে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান, বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, রমজান আসছে। সর্বশেষ পরিস্থিতি দেখা হয়েছে। কোনো পণ্যের সংকট নেই। চিন্তার কোনো কারণ নেই। সংকটের কোনো কারণ নেই। কিছু মহল চেষ্টা করে কীভাবে সিচুয়েশনকে ডিস্টাবলাইজ করা যায়। যেখানে মার্কেট ইকোনমি অপারেট করছে সেখানে সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করবে।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, যেভাবে প্রাইস লেভেলকে ধরে রাখা যায় সেই কাজগুলোই সরকার করছে। দরকার হলে অনেক কঠোর পদক্ষেপের দিকে যাওয়া হবে। দরকার হলে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের দিকে যাব, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।
এখনো শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয়ার মতো পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়নি— এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, না, এখনো হয়নি।
তাহলে জরুরি বৈঠকের কারণ কি— সাংবাদিকেরা এমন পাল্টা প্রশ্ন করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, নির্বাচনের পরে ন্যাচারালি সবাই তো বলছে কি করছেন, কি করলেন?
আপনাদের টার্গেট কি শুধু রমজান— এমন প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, শুধু রমজান না, রমজান নিয়ে চিন্তা তো আছে মানুষের মধ্যে। সেই জন্য।
চালের দাম বাড়ানোর পর সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে, এটি জানানোর পর অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা পদক্ষেপ নিচ্ছি। আলোচনা করছি, দেখছি। দেখেন আপনারা। এরই মধ্যে দাম কমেছে।
জিনিসপত্রের দাম কত দিনের মধ্যে কমবে— এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, সেভাবে এটা কখনোই বলা সম্ভব না।
আমদানিকে প্রাধান্য দেবেন কি না— এ প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী বলেন, দরকার হলে আমদানি করতে হবে, এখনো তো এ রকম কিছু হয় নাই।
এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেন, এই বসাটা একটি স্বদিচ্ছার প্রকাশ। আপনাদের আমাদের সবারই মনে রাখতে হবে শেখ হাসিনা সরকারের একটি রাজনৈতিক অঙ্গীকার এই দেশর মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য তাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখা এবং যাতে সহজলভ্য হয় সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারসাজিতে কিছু কিছু জিনিস ব্যত্যয় ঘটেছে, সেই ব্যত্যয় যাতে আর না ঘটে সেই ব্যাপারে যাতে পদক্ষেপ আমরা নিতে পারি, কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে সে ব্যাপারেও আলোচনা হয়েছে।
আব্দুর রহমান বলেন, মোদ্দা কথা হলো- এই বাজারে কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির শর্টেজ নেই। কিন্তু কিছু মধ্যস্বত্বভোগী আছে, কিছু মতলব বাজ যারা কারসাজি করে তারা আছে। সেই শ্রেণির কৃত্রিম একটি সংকটের কারণে আমরা মাঝেমধ্যে এই ধরনের একটি বিপদে পড়ি। সুতরাং আপনারা আজ থেকে আশ্বস্ত হতে পারেন যে, সমস্ত মেজার্স আমরা কঠিনভাবে নেব ইনশাআল্লাহ। আমরা আশা করি শিগগিরই আমরা আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব।
কারা বাজার ম্যানুপুলেট করছে তাদের শনাক্ত করা গেছে কি না— এমন প্রশ্নে আব্দুর রহমান বলেন, বের অবশ্যই করছি। সেই পূর্ণাঙ্গ বের করার ব্যাপারটি সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা সেই ব্যাপারে আলোচনা করছি। চিহ্নিতকরণ করাটা যখন সুনির্দিষ্ট করা যাবে, তখন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে, লাইসেন্স বাতিল করা হবে, তাদের ব্যবসা-বাণিজ্যের ছাড়পত্র বন্ধ করা হবে।
কিসের ভিত্তিতে আপনারা বলছেন রমজানের পণ্যের সংকট নেই— এমন প্রশ্নের উত্তরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, সমস্ত পরিসংখ্যান আছে, কোনো কিছুতে শর্টেজ নেই। ট্যাকটিক্যাল রিজনে সেই পরিসংখ্যানের বিস্তারিত আপনাদের (সাংবাদিক) দিতে চাই না। অনুমাননির্ভর এক জিনিস, সন্দেহ করা এক জিনিস, সন্দেহের তালিকা এক জিনিস, সেটিকে সুস্পষ্ট করা আরেক জিনিস। সেই সুস্পষ্টকরণ সম্পন্ন হলেই চিহ্নিত করা যাবে করা এর সঙ্গে জড়িত। এ জন্য একটু ধৈর্য ধরতে হবে।