ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটের মর্যাদাপূর্ণ টুর্নামেন্ট রঞ্জি ট্রফির ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছে মুম্বাই ও বিদর্ভ। চলমান এই টেস্ট দেখতে মাঠে হাজির হয়েছিলেন দেশটির ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার ও বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মা। আর এমন দিনেই শচীনের রেকর্ড ভেঙে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছেন মুশির খান। যিনি সম্প্রতি ভারত জাতীয় দলে অভিষেক হওয়া ব্যাটসম্যান সরফরাজ খানের ছোট ভাই।
মুম্বাইয়ের হয়ে মুশির সবচেয়ে কম বয়সী ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরির কীর্তি গড়েছেন। যে রেকর্ড এতদিন পর্যন্ত দখলে ছিল শচীনের। ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে রঞ্জির ফাইনালে পাঞ্জাবের বিপক্ষে একই দলের হয়ে তিনি সর্বকনিষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে সেঞ্চুরি করেছিলেন। এমনকি দুই ইনিংসেই জোড়া সেঞ্চুরিতে মুম্বাইকে শিরোপা জিতিয়েছিলেন শচীন। চলমান টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মুশির সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ানের সেই রেকর্ড ভাঙলেও, প্রথম ইনিংসে করেন মাত্র ৬ রান।
সম্প্রতি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতের হয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করা এই তরুণ কিছুদিন পরই ১৯ বছরে পা দেবেন। তার আগে শচীনের রেকর্ড ভেঙে প্রশংসা পেয়েছেন তার কাছ থেকেও। বিশেষত প্রথমে মুশির জুটি বেধেছিলেন অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে, এরপর শ্রেয়াশ আইয়ারের সঙ্গে গড়া জুটিতে মুম্বাইকে বড় পুঁজি এনে দেন। বড় দুই জুটির জন্য মুম্বাইয়ের দ্বিতীয় ইনিংসকে শৃঙ্খলা, ধৈর্য্য ও আত্মনিবেদনের অনন্য প্রদর্শন বলে উল্লেখ করেন সাবেক ভারতীয় এই লিটল মাস্টার।
রঞ্জিতে সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন পূরণের পর শচীনকে দেখেই এমন ইনিংসের অনুপ্রেরণা পেয়েছেন বলে জানান মুশির। তৃতীয় দিনের খেলা শেষে তিনি বলেন, ‘শচীন স্যার যে এখানে (গ্যালারিতে) আছেন আমি জানতামও না। তবে যখন আমি ৬০ রানে থাকাবস্থায় ব্যাট করছি, তখন বড় স্ক্রিনে তাকে দেখি এবং তিনি আমার খেলা দেখছেন এই প্রেরণা থেকে ব্যাটিং করতে থাকি। আমি চেয়েছি স্যার যেন মুগ্ধ হন। রঞ্জির ফাইনালে সেঞ্চুরি করার স্বপ্ন ছিল আমার, একইসঙ্গে আমার জন্য গর্বের বিষয় যে দুজন অভিজ্ঞ টেস্ট ক্রিকেটারের (রাহানে–আইয়ার) সঙ্গে খেলতে পেরেছি। সে কারণে আমার কাজটাও সহজ হয়েছে।’
আউট হওয়ার আগে মুশিরের ব্যাট থেকে আসে ১৩৬ রান। এছাড়া আইয়ারের ৯৫, রাহানের ৭৩ এবং শামস মুলানির ৫০ রানে ভর করে দ্বিতীয় ইনিংসে মুম্বাইয়ের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪১৮ রানে। এর সঙ্গে প্রথম ইনিংসে পাওয়া ১১৯ রানের লিড যোগ করে বিদর্ভের সামনে তারা ৫৩৮ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। সবমিলিয়ে দাপুটে অবস্থানেই রয়েছে মুশির–আইয়ারদের দল মুম্বাইয়ের।
উল্লেখ্য, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপেও ব্যাটে-বলে দারুণ পারফর্ম করেছেন মুশির। সাত ম্যাচে তিনি ৩৬০ রান করেছেন, যেখানে রয়েছে দুটি সেঞ্চুরি। পাশাপাশি তিনি সাতটি উইকেটও শিকার করেছেন। যদিও যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে রান পাননি মুশির। ফলে তাদের দল ভারতও অস্ট্রেলিয়ার কাছে শিরোপা খুইয়েছে। বিশ্বকাপের পরই মুম্বাইয়ের রঞ্জি দলে ডাক পান সরফরাজের এই ছোট ভাই। ভাইয়ের মতো তিনিও ঘরোয়া ক্রিকেটে নজর কাড়তে শুরু করেছেন।