শিশুর শরীরে প্রোটিনের অভাবের ফলে শারীরিক ও মানসিক ক্ষেত্রে নানা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। প্রোটিনের অভাবের লক্ষণগুলো নিয়ে আজকের আলোচনা।
শিশুর বারবার খিদে পেলে বুঝতে হবে যে, তাদের শরীরে প্রোটিনের অভাব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে শরীর ক্ষুধা বাড়িয়ে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে। কিন্তু প্রোটিনের গুরুতর অভাব থাকলে শিশুর খিদা কমে যেতে পারে।
আর হাড় গঠন ও মজবুত করার জন্য ক্যালশিয়ামের মতোই প্রোটিনও উপযোগী। প্রোটিন হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে হাড় দুর্বল হতে পারে। যার ফলে শিশুর হাড় সামান্য আঘাতেই ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
এ ছাড়া মনোযোগের অভাব হলে কোষের মধ্যে যোগাযোগ গড়ে তোলার জন্য মস্তিষ্কে এক ধরনের রসায়নের প্রয়োজন হয়, যার অধিকাংশই অ্যামিনো অ্যাসিড নামক প্রোটিনের দ্বারা তৈরি। প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে। ফলে শিশুরা মেজাজ হারায়, তাদের ব্যবহারে পরিবর্তন হয় ও মনোযোগ কমতে শুরু করে।
শিশুর প্রোটিনের অভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়। এতে শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। রক্তে উপস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে, যা রোগপ্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলে। তাই শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি থাকলে শিশু ঘন ঘন ভাইরাস ও ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।
আবার শুকনো, খসখসে, ফাটল ধরা ত্বক, চুল পাতলা ও সাদা হয়ে যাওয়া, চুল ঝরা, ভঙ্গুর নখ প্রোটিনের ঘাটতির অন্যতম লক্ষণ। কারণ ত্বক, চুল ও নখের অধিকাংশ প্রোটিন দ্বারা গঠিত।
এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ না করলে পেশি মজবুত হয় না। পাশাপাশি শরীরের মেটাবলিজম কমে যায়। এ ছাড়া প্রোটিনের ঘাটতি অ্যানিমিয়ার অন্যতম কারণ। এমন পরিস্থিতিতে শিশুদের মধ্যে আলস্য বাড়তে থাকে।
শিশুর শরীরের বৃদ্ধি ও কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে প্রোটিন। তাই সুস্থ ও স্বাভাবিক শারীরিক বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন গ্রহণ আবশ্যক। তা না হলে শিশুর বৃদ্ধির গতি শ্লথ হয়।