জানুয়ারি ১১, ২০২৪ ১২:০৪ অপরাহ্ণ
দেশের উত্তরাঞ্চলে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। ঘন কুয়াশা আর কনকনে ঠান্ডায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষ। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন শিশু ও বয়স্করা। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলছে গাড়ি। ব্যুরো ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
রংপুরে নষ্ট হচ্ছে বোরো বীজতলা : রংপুর মহানগরীসহ এ অঞ্চলে কয়েক দিন ধরে অব্যাহতভাবে তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশা বিরাজ করছে। আবহাওয়া পরিস্থিতির কারণে হুমকির মুখে পড়েছে বোরো বীজতলা। অধিকাংশ চারাই লালচে-হলুদ হয়ে গেছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানিয়েছেন, এখনো বীজতলা নষ্ট হওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। তবে এরকম আবহাওয়া আর কিছু দিন থাকলে বীজতলা নষ্ট হতে পারে। এ জন্য আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা নওগাঁর বদলগাছীতে : নওগাঁয় বুধবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। সকাল ৯টায় নওগাঁর বদলগাছীতে সর্বনিম্ন ১০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে। বুধবার বেলা ১২টায়ও সূর্যের দেখা মেলেনি। অটোরিকশাচালক সাইফুল ইসলাম বলেন, শীতের কারণে লোকজন বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না। তাই ভাড়া হচ্ছে কম। সংসার চালানোই দায় হয়ে পড়েছে। গত এক সপ্তাহে ডায়রিয়া ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ৮২৬ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
হিলিতে ঘন কুয়াশা : দিনাজপুরের হিলিতে কয়েক দিন ধরে ঘনকুয়াশায় ঢেকে আছে চার পাশ। হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে সব ধরনের যানবাহন। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছে না কেউ। হাসপাতালগুলোতে বেড়েছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। বুধবার সকাল ৯টায় হিলিতে ১১ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
কাউনিয়ায় হাড় কাঁপানো শীত : পৌষের শুরুতেই রংপুরের কাউনিয়ায় হাড় কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। দিনভর পথঘাট ঘন কুয়াশায় ঢেকে থাকায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের শ্রমজীবী মানুষ। শীত উপেক্ষা করে তিস্তার চরে আলু, সরিষা ভুট্টা, তামাক, গম খেতে কাজ করতে দেখা যায় শ্রমজীবী মানুষকে। খড়কুটা জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা যায় গ্রামের মানুষকে।
নীলফামারীতে সূর্যের দেখা নেই : শৈত্য প্রবাহ বিরাজ করছে নীলফামারীতে। মেঘলা আকাশ আর কুয়াশার কারণে তিন দিন ধরে সূর্যের দেখা মেলেনি এই জেলায়। ভোর রাত থেকে বৃষ্টির মতো পড়ে কুয়াশা। ঘন কুয়াশায় সৈয়দপুর বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠা-নামা ব্যাহত হচ্ছে। বিমানবন্দর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ লোকমান হোসেন জানান, বুধবার সকাল ৬টায় নীলফামারীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ দশমিক শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ট্রাকের সারি : ঘন কুয়াশার কারণে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে মঙ্গলবার রাত ১টা ৩০ মিনিট থেকে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বন্ধ থাকার পর ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে দৌলতদিয়া মডেল হাইস্কুল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তের পুলিশ বক্স এলাকা পর্যন্ত ট্রাকের সারি আটকে থাকার চিত্র দেখা যায়। আটকে পড়ে অনেক যাত্রীবাহী বাসও।
শেরপুরে শীতে কাবু মানুষ : সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুরে বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সামান্য দূরের জিনিসও ঝাপসা দেখাচ্ছিল। কনকনে শীতে কাবু হয়ে পড়ছেন অনেক মানুষ। স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়েছেন কৃষি শ্রমিকরা। ঠান্ডা পানি ও কাদায় নেমে বোরো ধানের চারা রোপণ এবং বীজতলা থেকে ধানের চারা তোলা ও খেত তৈরির কাজ খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। শেরপুরের জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম জানান, শীত মোকাবিলায় শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হচ্ছে।