ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গত ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ধারণা করা হচ্ছে, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতির সূচনা হতে পারে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে প্রভাব বাড়তে পারে চীনের। রোববার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে ভয়েস অব আমেরিকা।
নয়াদিল্লির অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের অধ্যয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট হর্ষ পান্ত বলেন, ‘এটি ভারতের জন্য একটি গুরুতর চ্যালেঞ্জ। ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকার ছিল, যারা মূলত ভারতীয় স্বার্থের প্রতি সহানুভূতিশীল। তাই বছরের পর বছর স্থিতিশীলতার পরে এখন রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা চলছে তা অস্বস্তিকর। বাংলাদেশে চীনের বড় ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ থাকবে ভারতের’।
বিগত শাসনামলে উন্নয়নের স্বার্থে চীনের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। একইসঙ্গে ভারতের সঙ্গে জোরালো সম্পর্ক ধরে রাখে আওয়ামী লীগ। হর্ষ পান্তের আশঙ্কা, অতীতে বিএনপি চীনের প্রতি বেশি ঝুঁকেছে। তাই এবারও ভারতীয় স্বার্থ উপেক্ষিত হতে পারে।
পান্ত আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা নয়াদিল্লির দৃষ্টিকোণ থেকে বেশ কার্যকরভাবে চীনা ও ভারতীয় স্বার্থের ভারসাম্য বজায় রেখেছিলেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলকে (বিএনপি) অতীতে ক্ষমতায় থাকাকালে চীনপন্থী দল হিসেবে দেখা হতো।’
আওয়ামী লীগ সরকার যেভাবে ভারতের কংগ্রেস এবং বিজেপির সঙ্গে সম্পর্কের ভিত্তি ধরে রেখেছিলেন, ঠিক সেভাবে দিল্লিকেও ঢাকার পরিবর্তিত সরকারের সঙ্গে কাজ করতে হবে বলেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এর আগেও বিএনপির সঙ্গে কাজ করেছে ভারত। বাংলাদেশ নিয়ে ভারতের নীতি পরিবর্তনের কথাও বলেছেন তিনি।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের সাথে ভারতকে তার পুরোনো নীতির প্রতিফলন করতে হবে। তবে এখন সময় এসেছে নতুন ভিত্তিতে সম্পর্ক পুনর্গঠনের। বাংলাদেশ দিল্লিতে পরিবর্তনশীল সরকারগুলোর সঙ্গে থাকতে শিখেছে। ভারতকেও তাই করতে হবে।’
এদিকে বাংলাদেশে শাসনক্ষমতায় আওয়ামী লীগ না থাকলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো নিরাপদ থাকবে না বলেছেন শেখ হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। এ কারণে মোদি সরকারকে বাংলাদেশে চাপপ্রয়োগ করার আহ্বানও করেছেন তিনি।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জয় বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত নিরাপদ থাকবে না। বিএনপি ও জামায়াতের জোট হলে সেটা ভারতের জন্য ভালো নাও হতে পারে। কারণ জামায়াত জঙ্গিবাদ থেকে বিরত থাকবে না’।