এপ্রিল ২৬, ২০২৪ ১০:০৮ পূর্বাহ্ণ
সব প্রক্রিয়া শেষ করেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কাছ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন না ৫ লাখের মতো আবেদনকারী। ঢাকার এক সার্কেলেই আটকে আছে প্রায় দেড় লাখ আবেদন। কারণ কার্ড সরবরাহ করতে পারছে না সংস্থাটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাঙ্ক্ষিত স্মার্ট কার্ডের আশায় মাসের পর মাস বিআরটিএ’র জেলা ও সার্কেল অফিস থেকে প্রধান কার্যালয়ে ঘুরছেন লাইসেন্সপ্রত্যাশীরা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড না মেলায় চাকরি পাওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চালক পদে আবেদনকারী অনেকেই। জীবিকার তাগিদে অনেকের বিদেশযাত্রাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এছাড়া লাইসেন্স নবায়ন করে স্মার্ট কার্ড না পাওয়ায় কাজ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন অনেক পেশাদার চালক।
বিআরটিএ’র তথ্যমতে, কার্ডের সংকট থাকায় ৫ লাখের মতো আবেদন ঝুলে আছে। ঢাকা মেট্রো সার্কেল-১ (মিরপুর) এই এক সার্কেলেই আটকে আছে ১ লাখ ৪৮ হাজার আবেদন। ঢাকা জেলা সার্কেল ইকুরিয়াতে আছে ৪০ হাজার। তবে জরুরি প্রয়োজনে বিআরটিএ চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করে স্মার্ট কার্ড পাওয়া যায়। কিন্তু সেই সংখ্যা খুবই কম। সম্প্রতি বিমানবন্দরে কার্ডের বড় একটি চালান এসেছে।
বিআরটিএকে লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড সরবরাহ করে মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স (এমএসপি) প্রাইভেট লিমিটেড। তারা বলছে, ডলার সংকটের জন্য তারা কার্ড আমদানি করতে পারছে না। যখন চুক্তি হয় তখন ডলারের বিনিময় মূল্য ছিল ৮৫ টাকা; যা এখন ১০৯ টাকা।
মাদ্রাজ প্রিন্টার্সের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপক আশরাফ বিন মুস্তফা বলেন, আমদানি জটিলতায় কার্ড আনতে কিছু সমস্যা আছে। সেই সঙ্গে ডলারের একটা ক্রাইসিস আছে। কার্ড যদি থাকে তাহলে ৩ মাসের মধ্যে ৫ লাখ কার্ড প্রস্তুত করার সক্ষমতা আমাদের আছে। তবে আশা করি সামনে এই কার্ড সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
ড্রাইভিং লাইসেন্সের স্মার্ট কার্ড নিয়ে ভোগান্তি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, একটি স্মার্ট কার্ডের জন্য মানুষ বছরের পর বছর বিআরটিএতে ঘুরেও কার্ড পাচ্ছে না। বিশেষ করে যারা বিদেশে যেতে চান ড্রাইভিং ভিসায় তারা এই কার্ডের জন্য যেতে পারছেন না। আর অনেক চালক আছেন নতুন করে লাইসেন্স নবায়ন করতে গিয়ে তাদের কার্ড এখনো পাননি। অনেক চালক ভালো কোম্পানিতে চাকরি পাচ্ছেন না এই কার্ডের জন্য। অনেকে বেকারও হয়ে গেছেন। তা ছাড়া সরকার এত টাকা বরাদ্দ দেয় বিআরটিএকে। একটি মেশিন কিনে বিআরটিএ তো চাইলে নিজেরাই কার্ড তৈরি করতে পারে। তাহলে এই কার্ডের জন্য মানুষকে আর ভোগান্তি পোহাতে হয় না।
স্মার্ট কার্ডের সংকটের বিষয় বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার বলেন, বিআরটিএ এখন অনেক আধুনিক হয়ে গেছে। এখন দ্রুত সময়ের মধ্যে সব কাজ শেষ হয়ে যায়। স্মার্ট কার্ডের কিছু সংকট আছে। তবে দেশের বাইরে যাওয়ার জন্য যাদের কার্ড প্রয়োজন তাদের আবেদনের মাধ্যমে স্মার্ট কার্ড দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তা ছাড়া বিমানবন্দরে তিন লাখের মতো কার্ড এসে গেছে। আশা করছি খুব দ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।