ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার দাবি করেছে ইসরাইলের সেনাবাহিনী।
গত ১৩ জুলাই ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার খান ইউনিস এলাকায় বিমান হামলায় মোহাম্মদ দেইফ নিহত হন বলে বৃহস্পতিবার ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে। তবে বিষয়ে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
দক্ষিণ গাজার আল-মাওয়াসিতে বাস্তুচ্যুতদের আবাসস্থল তাঁবুতে এই হামলায় ৯০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছিল, তবে দেইফ তাদের মধ্যে ছিল কি না সে সময় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ওই বিমান হামলার পর হামাসের আরেক কমান্ডার রাফা সালেমেহ নিহত হওয়ার খবর দিয়েছিল ইসরাইলি সামরিক বাহিনী। বলা হয়েছে, তখন মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এখন ইসরাইল বলছে, দেইফ নিহত হয়েছেন বলে তারা নিশ্চিত হতে পেরেছে।
ইরানের রাজধানী তেহরানে এক হামলায় হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়ার হত্যার খবর জানার একদিন পর সংগঠনটির সামরিক শাখার প্রধান মোহাম্মদ দেইফ নিহত হওয়ার খবর জানা গেল।
মোহাম্মদ দেইফ হামাসের সামরিক শাখা আল–কাসেম ব্রিগেডের কমান্ডার। দেইফের জন্ম ১৯৬৫ সালে, খান ইউনিস শরণার্থীশিবিরে। ১৯৪৮ সালের আরব–ইসরাইল যুদ্ধের পর এই শরণার্থীশিবির প্রতিষ্ঠিত হয়।
দেইফের নাম ছিল মোহাম্মদ মাসরি। ১৯৮৭ সালে প্রথম ইন্তিফাদা শুরুর পর তিনি হামাসে যোগ দেন। তখন তার নাম হয় মোহাম্মদ দেইফ।
১৯৮৯ সালে ইসরাইলি বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন দেইফ। তখন ১৬ মাস কারাগারে ছিলেন তিনি।
গাজায় হামাসের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় অসংখ্য টানেল বা সুড়ঙ্গ রয়েছে। এ নেটওয়ার্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন দেইফ। এ ছাড়া তিনি হামাসের বোমা বানানোর প্রকল্পে ভূমিকা রেখেছেন। তবে সচরাচর প্রকাশ্যে আসতেন না দেইফ।
কয়েক দশক ধরে ইসরাইল তাকে হত্যার চেষ্টা করে আসছে। ইহুদিবাদী দেশটির পক্ষ থেকে একাধিকবার হত্যাচেষ্টায় দেইফ একটি চোখ হারান। সেই সঙ্গে পায়ে গুরুতর আঘাত পান তিনি। ২০১৪ সালে ইসরাইলের বিমান হামলায় দেইফের স্ত্রী, সাত মাসের পুত্রসন্তান এবং তিন বছর বয়সী মেয়ের মৃত্যু হয়।