শরীরের হাই প্রেশারের মতো লো প্রেশারও বিপদের কারণ হতে পারে। হঠাৎ প্রেশার কমে যাওয়ার ফলে আপনি প্রাণশক্তি হারাতে শুরু করেন।
লো ব্লাড প্রেশারকে হাইপোটেনশনও বলা হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হঠাৎ প্রেশার অতিরিক্ত নেমে গেলে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ডে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে না। তাই এ সময় রোগী শারীরিক নানা জটিলতা অনুভব করতে শুরু করেন। চিকিৎসকরা বলছেন, প্রায়ই যদি প্রেশার লো হওয়ার সমস্যা দেখা দেয়, তাহলে তা অকালে মস্তিষ্ক, কিডনি ও হৃৎপিণ্ড বিকলের কারণ হতে পারে।
লো প্রেশার বা হাইপোটেনশন কী?
চিকিৎসাশাস্ত্র অনুযায়ী, একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০। এই স্বাভাবিক রক্তচাপের কম যেমন রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ বা এর আশপাশে থাকে তাহলে তা লো প্রেশার হিসেবে ধরা হয়।
লো প্রেশারের কারণ
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লো প্রেশার বা নিম্ন রক্তচাপের উল্লেখযোগ্য কারণ হলো বয়স অনুযায়ী ওজন কম হওয়া, সঠিক পরিমাণের কম খাবার গ্রহণ করা, অতিরিক্ত পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা, অপর্যাপ্ত ঘুম, অপুষ্টি, রক্ত ও পানিশূন্যতা, হরমোনের ভারসাম্য না থাকা, গ্যাসট্রিকের সমস্যা ইত্যাদি।
লো প্রেশারের লক্ষণসমূহ
প্রেশার লো হলে আপনার মধ্যে তাৎক্ষণিক কিছু শারীরিক জটিলতা দেখা দেবে। যেমন: মাথা ঘোরানো, ক্লান্তি, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, বমি বমি ভাব, বুক ধড়ফড় করা, অবসাদ, দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসা, স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে অসুবিধা ইত্যাদি।
লো প্রেশার হলে দ্রুত ঘরে যা করবেন
কোনো কারণে হঠাৎ প্রেশার লো হয়ে গেলে ঘাবড়ে না গিয়ে ঘরেই কিছু দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। জাতীয় হৃদ্রোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক ডাক্তার তারেক আহমেদ চৌধুরী প্রেশার বাড়াতে কার্যকরী কিছু খাবারের কথা বলেছেন। আসুন, তা একে একে জেনে নিই-
(এক) কিশমিশ পানিতে ভিজিয়ে সেই পানি পান করুন। পানিতে ভেজানো কিশমিশ না থাকলে দ্রুত ৭টি কিশমিশ খেয়ে নিন।
(দুই) একটি হাঁসের ডিম সিদ্ধ করে তাতে লবণ মাখিয়ে খেয়ে নিতে পারেন। বাড়িতে হাঁসের ডিম না থাকলে মুরগির ডিম সিদ্ধ করে খেয়ে নিন।
(তিন) লবণ মিশিয়ে একমুঠ বাদামও খেতে পারেন। বাদাম আর লবণ উভয়ই প্রেশার বাড়াতে ভালো কাজ করে।
(চার) ঘরে ডিম না থাকলে এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেতে পারেন। তবে খেয়াল রাখুন, তরল দুধ যেন প্যাকেটের না হয়। খাঁটি গরুর দুধ এ ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে।
(পাঁচ) খাবার স্যালাইন প্রেশার দ্রুত বাড়াতে পারে। তাই আধা লিটার পানিতে এক প্যাকেট ওরস্যালাইন মিশিয়ে নিয়ে অর্ধেক খেয়ে ফেলুন। ২ ঘণ্টা পরপর বাকি স্যালাইন দুবারে খেয়ে নিন।
(ছয়) সবজি বা মাংসের স্যুপ খেতে পারেন। এ খাবার শরীরে রক্ত সঞ্চালনের মাত্রা বাড়াতে পারে।
(সাত) ডাবের পানি ব্লাড প্রেশার বাড়াতে দারুণ কার্যকরী। তাই ঝটপট প্রেশার বাড়াতে ডাবের পানিও খেতে পারেন।
উল্লেখ্য, অনেক সময় প্রেশার বাড়ার এবং কমার লক্ষণগুলো একই রকম হয়। তাই ঘরোয়া এসব পদ্ধতি অনুসরণ করার আগে প্রেশার মেপে দেখে নিন। এসব উপায়েও যদি প্রেশার না বাড়ে; তবে অবশ্যই দ্রুত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।