ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে লম্বা ছুটির ফাঁদে পড়েছে রাজধানী ঢাকার বাসিন্দারা। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ইতোমধ্যেই অনেকে রাজধানী ছাড়তে শুরু করেছেন। তাই ফাঁকা হতে শুরু করেছে ঢাকা। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে আরও ফাঁকা হবে ইট-পাথরের এই নগরী। ওই সময়ে সক্রিয় হতে পারে অপরাধী চক্র। এ বিষয়টি মাথায় রেখে নিñিদ্র নিরাপত্তার ছক তৈরি করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। ডিএমপির অপারেশন্স বিভাগ প্রণীত এ ছকে প্রাধান্য পাচ্ছে ঈদগাহ মাঠ, বিপণিবিতান, মার্কেট, ব্যাংক এবং এটিএম বুথ। এছাড়া গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে তৈরি করা হয়েছে আলাদা নিরাপত্তা ছক। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
নিরাপত্তা ছক অনুযায়ী, আবাসিক এলাকায় পুলিশের মোবাইল প্যাট্রোল গমনাগমন নিশ্চিতসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাকে ফুট প্যাট্রোলের আওতায় আনতে বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, প্রতিদিনই এলাকা এবং স্থান পরিবর্তন করে চেকপোস্ট পরিচালনা করতে হবে। সব চেকপোস্টেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরালো করতে হবে। জোরদার করতে হবে মোটরসাইকেলবিরোধী অভিযান। মোটরসাইকেলে কোনোভাবে তিনজন আরোহী চলাচল করতে পারবে না। রাস্তা ফাঁকার সুযোগে কেউ যেন মোটরসাইকেল এবং প্রাইভেটকার উচ্চগতিতে চালিয়ে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়াতে না পারে, সেজন্য থাকবে বিশেষ ব্যবস্থা। চেকপোস্ট, তল্লাশি ও গাড়ি চেকিং কার্যক্রম পরিচালনা করবে ট্রাফিক বিভাগ।
ডিএমপি এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ছুটির সময়ে ব্যাংক এবং স্বর্ণের দোকানের ছাদ ছিদ্র করে বা সিঁধ কেটে চুরি-ডাকাতির আশঙ্কা আছে। এই চুরি-ডাকাতি প্রতিরোধে নিরাপত্তাকর্মীকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। বাসা-বাড়ি, অফিস-আদালত, মার্কেট, ব্যাংক, স্বর্ণের দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তায় প্রাইভেট সিকিউরিটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। রাতে মোবাইল প্যাট্রোলগুলোকে হুটার বাজিয়ে টহল দিতে হবে। চেকপোস্ট চলাকালীন সাধারণ মানুষ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে। ছুটিকালীন বেপরোয়া চলাচলকারী যানবাহনের চালকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ডিএমপি সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, ঈদের নিরাপত্তায় এবারই প্রথম ডিএমপি প্রত্যেক থানা থেকে মোটরসাইকেল মোবাইল টিম টহল ডিউটি করবে। প্রতিটি টিমে দুটি করে মোটরসাইকেল থাকবে। একটি মোটরসাইকেলে একজন এসআই/এএসআইয়ের পাশাপাশি একজন করে কনস্টেবল থাকবেন। তাদের হাতে থাকবে পিস্তল, শটগান এবং বেতারযন্ত্র। মহানগরের প্রবেশ এবং বের হওয়ার পথগুলোতে ২৪ ঘণ্টা কার্যকর থাকবে চেকপোস্ট।
ঢাকা মহানগর ছিনতাই প্রতিরোধ টাস্কফোর্সের সভাপতি ও ডিএমপির উপকমিশনার আলমগীর হোসেন বলেন, ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকার বাইরে গেছেন, তারা যাতে নিরাপত্তা ঢাকায় ফিরতে পারেন, সে বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। পাশাপাশি বাসা-বাড়িতে রেখে যাওয়া মালামাল যাতে চুরি হতে না পারে, সে বিষয়টি খেয়াল রাখছি। তিনি বলেন, রোজাকে ঘিরে আমার যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলাম, ঈদকে ঘিরে তা আরও জোরালো করা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যে ঈদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা কার্যকর করতে শুরু করেছি। তিনি আরও বলেন, ছিনতাইবিরোধী টাস্কফোর্সের তৎপরতার কারণে এবার রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের তৎপরতা অনেক কম।