পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এক এলাকায় উপজাতিদের মধ্যে ভূমি নিয়ে দ্বন্দ্বে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয় দুই উপজাতি গোষ্ঠীর সদস্যদের মেশিনগান থেকে গুলি ও মর্টার ছুড়ে হামলা-পাল্টা হামলা করতে দেখা গেছে। এতে দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।
রোববার (২৮ জুলাই) দেশটির পুলিশের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, আফগান সীমান্ত লাগোয়া পাকিস্তানের কুররাম জেলায় গত বুধবার থেকে সুন্নিপন্থি মুসলিম মাদাগি ও শিয়াপন্থী মালি খেল উপজাতি গোষ্ঠীর সদস্যদের মাঝে সংঘাত চলছে।
স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মুর্তজা হুসেন বলেন, ওই দিন কৃষিজমি নিয়ে কয়েক দশক ধরে চলে আসা বিরোধের এক আলোচনায় গুলি চালান একজন বন্দুকধারী। ওই হামলায় কেউ আহত হননি। গুলির এই ঘটনা আফগানিস্তানের সীমান্তের কুররাম জেলায় পাশাপাশি বসবাসকারী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে দীর্ঘদিনের ধর্মীয় উত্তেজনাকে আবারও জাগিয়ে তোলে।
মুর্তজা হুসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে এই ঘটনা ভূমি নিয়ে বিবাদ ছিল। বর্তমানে এটি সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় পরিণত হয়েছে। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ৩৫ জনের প্রাণহানি ঘটেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, দেশের সরকার এবং স্থানীয় নেতারা জিরগার (উপজাতি পরিষদ) মাধ্যমে সংঘাত বন্ধ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এই চেষ্টা এখনও সফল হয়নি।
পাকিস্তানে আন্তঃপারিবারিক কলহ একেবারে সাধারণ ঘটনা। দেশটিতে প্রায়ই এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা ঘটে। খাইবার পাখতুনখোয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পার্বত্য এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে এমন সহিংস ঘটনা ঘটে আসছে।
নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়ে কুররাম জেলার জ্যেষ্ঠ এক সরকারি কর্মকর্তাও চলমান সংঘাতে ৩৫ জনের প্রাণহানির তথ্য জানিয়েছেন। তবে এই ঘটনায় আরও ১৫১ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, পঞ্চম দিনের মতো সেখানে সংঘাত চলছে। বর্তমানে এই সংঘাত শিয়া-সুন্নি বিরোধে পরিণত হয়েছে। সংঘাত সমাধানের সব ধরনের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার সুন্নি সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ পাকিস্তান। দেশটিতে শিয়াপন্থি মুসলিমরা প্রায়ই বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হন।
সরকারি ওই কর্মকর্তা বলেছেন, চলমান সংঘাতে শিয়া উপজাতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের অন্তত ৩০ জন নিহত হয়েছেন।