মিয়ানমারে জান্তা উৎখাতে একজোট বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিষ্টানরা

মিয়ানমারে জান্তা উৎখাতে একজোট বৌদ্ধ-মুসলিম-খ্রিষ্টানরা

আন্তর্জাতিক

অক্টোবর ২০, ২০২৪ ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে একাধিক বিদ্রোহী গোষ্ঠী। বিদ্রোহীদের কবলে পড়ে ইতোমধ্যেই মুখ থুবড়ে পড়েছে জান্তা। এবার জান্তা উৎখাতে একজোট হয়েছে মিয়ানমারের মুসলিম, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানরাও।

শনিবার এ তথ্য জানিয়েছে কাতার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদন বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের তানিনথারি এলাকায় বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা শহরের দিকে যাওয়া গাড়ি ও ট্রাক চেক করছে।

২০২১ সালে জান্তার ক্ষমতা দখলের পর এলাকাটিতে ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক থেকে আলাদা হলেও একজোটে তাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাচ্ছে বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠীর অনুসারীরা। দেশটিতে এসব চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা ব্যক্তিরা স্বল্প পরিচিত ‘মুসলিম কোম্পানির’ সদস্য, যারা খ্রিস্টান এবং বৌদ্ধ-অধ্যুষিত সশস্ত্র গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ইউনিয়নের (কেএনইউ) অংশ হিসাবে মিয়ানমারে গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রামে যোগ দিয়েছে।

তানিনথারির এ যোদ্ধাদের আনুষ্ঠানিকতা ব্রিগেড-৪ এর থার্ড কোম্পানি হিসাবে নামকরণ করা হয়েছে। এ অংশে ১৩০ জন মুসলিম সেনা রয়েছেন। হাজার হাজার যোদ্ধাদের সঙ্গে জান্তাকে উৎখাত করতে যোগ দিয়েছেন তারা।

আলজাজিরা জানিয়েছে, মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলের পাহাড়ি ঘেরা এলাকায় অজ্ঞাত জায়গায় এ ইউনিটের সদরদপ্তর পরিদর্শন করেছেন তারা। মুসলিম কোম্পানির নেতা মোহাম্মদ আইশার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘকাল ধরে লড়াই করা সশস্ত্র প্রতিরোধ আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, কিছু এলাকায় জাতিগতদের নিজস্ব স্টেট থাকায় তাদের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, এসব এলাকায় কোনো একক গোষ্ঠী শাসন করে না। তবে সামরিক বাহিনীর দমনপীড়ন সব গোষ্ঠীকে প্রভাবিত করে। যতদিন সামরিক বাহিনী থাকবে ততদিন মুসলমান এবং অন্য সবাই নিপীড়িত হবে। আইশার বলেছেন, জান্তাবিরোধী শক্তির মধ্যে বৈচিত্র্যের গ্রহণযোগ্যতা সাংস্কৃতিক এবং আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করবে। যা পূর্বে মিয়ানমারে সংঘাতের কারণ হয়েছিল।

মিয়ানমারে ২০২১ সালের ফেব্র“য়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশটি শাসন করছে সেনাবাহিনী সমর্থিত ‘দ্য স্টেট অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল’ (এসএসি)। সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

সম্প্রতি দেশটির বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র জাতিগত বিভিন্ন গোষ্ঠী ও বিদ্রোহী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) লড়াই চলছে। গত বছরের অক্টোবরে বড় ধরনের হামলা চালানোর জন্য সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো একজোট হয়ে হামলা শুরুর পর থেকে মিয়ানমারের বিস্তীর্ণ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে।

কয়েকটি আন্তর্জাতিক খবরে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের ভূখণ্ডের অর্ধেকেরও কম অংশের নিয়ন্ত্রণ এখন জান্তা বাহিনীর হাতে আছে। ফলে চাপের মুখে পড়েছে জান্তা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *