ক্লাবের পরিচয়ে পরিচিত তারা

ক্লাবের পরিচয়ে পরিচিত তারা

খেলা

নভেম্বর ১৪, ২০২৩ ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

জাতীয় দলের হয়ে নেই উল্লেখযোগ্য সাফল্য। বড় টুর্নামেন্টেও দেশের হয়ে নিয়মিত খেলার সুযোগ হয় না। তবুও তারা সেরার তালিকায়। এই সময়ের চেনা মুখ, ফুটবলে তাদের ভিন্ন সমর্থকও রয়েছে। এমন তিনজন হলন- মোহামেদ সালাহ, রিয়াদ মাহরেজ এবং আর্লিং হালান্ড।

মিশরে জন্ম নেয়া মোহামেদ সালাহর শৈশব কেটেছে ফুটবলের সঙ্গে। যদিও বাবা-মায়ের ইচ্ছে ছিল না ছেলে ফুটবলার হোক। অন্তত পিরামিডের দেশটিতে ফুটবলের তেমন জনপ্রিয়তা না থাকায় মোহামেদ সালাহকে এই পথে আসতে দিতে চাননি তার বাবা-মা। সেই ছেলেটি এখন মিশরের গন্ডি পেরিয়ে ইউরোপ মাতিয়ে চলছে।

সালাহর ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট ছিল ২০১২ সাল। যখন দেশের সীমানা প্রাচীর পেরিয়ে বিদেশি ক্লাব বাসেলে যখন নাম লেখালেন, তখনই বল পায়ে নৈপুণ্য দেখিয়ে সবার নজরে আসেন তিনি। এরপর সুইস সুপার লিগের শিরোপা জেতেন দুই দু’বার। সেই ধারাবাহিকতায় তার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে শীর্ষ পাঁচ লিগেও।

সেখান থেকে ১১ মিলিয়ন পাউন্ডে সালাহকে দলে টানে চেলসি। তবে নতুন লিগে নয়া পরিবেশে মানিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে সালাহর জন্য। তাতে ব্লুজরাও ধৈর্য্য হারায়, তাকে লোনে পাঠিয়ে দেন ফিওরেন্তিনা এরপর রোমায়। রোমাতে স্থায়ী হওয়ার পর লিভারপুল তার প্রতি আগ্রহ দেখায়। যে সুযোগ মিস করেননি সালাহও।

অল রেডসদের আক্রমণভাগের সেনানি হয়ে যান সালাহ। ড্রিবলিং আর ফিনিশিংয়ে এখন অন্যদেরও ছাড়িয়ে গেছেন। চলমান মৌসুমে প্রথম ছয় ম্যাচেই গোল পেয়েছেন তিনি। যা কিনা লিভারপুলের কোনো খেলোয়াড় পায়নি। নতুন করে নুনেজের সঙ্গেও রসায়নটা জমেছে বেশ। প্রিমিয়ার লিগের চলমান মৌসুমে নুনেজ ও সালাহ একে অপরকে ১৯টি গোলের সুযোগ তৈরি করেন। সেই সঙ্গে ৫ গোলে অ্যাসিস্ট। যা কিনা এই মৌসুমে প্রিমিয়ার লিগে সর্বোচ্চ।

২০১৭ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত ৩২২ ম্যাচে ১৯৮ গোল করেছেন এই উইঙ্গার। যার মধ্যে এই মৌসুমে তার গোল ১৭ ম্যাচে ১৭ ম্যাচে ১২টি। এরই মধ্যে অল রেডসদের হয়ে সাতটি শিরোপা। যেখানে মিশরের হয়ে একটিও না। তাছাড়া তার দেশ মিশর ফুটবলের সবচেয়ে বড় প্রতিযোগিতা বিশ্বকাপেও তেমন প্রাপ্তি নেই। প্রাপ্তি দূরে থাক অংশ নেওয়াও হয় না না তাদের।

ক্লাবের জার্সিতে উড়ছেন আর্লিং হালান্ড। নরওয়ের এই তারকা ক্লাবের পরিচয়ে পরিচিত হয়েছেন গোটা বিশ্বে। মূলত বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে আলো ছড়িয়ে গোটা পৃথিবী মাত করেছিলেন তিনি। এরপর প্রিমিয়ার লিগে ম্যানচেস্টার সিটিতে এসে রীতিমতো হইছই ফেলে দিয়েছেন। গোল করছেন গুনে গুনে। হালান্ডের বাবা আলফি হালান্ডও ছিলেন পেশাদার ফুটবলার। খেলেছেন লিডস ইউনাইটেডের হয়ে। আর প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় থাকাকালীন পৃথিবীর মুখ দেখেন হালান্ড।

২০০০ সালের কথা। ইংল্যান্ডে সপরিবারে বসবাস করছিলেন আলফি, তখনই আসে সুসংবাদ। বাবার স্বপ্ন ছেলে বড় হয়ে নামকরা ফুটবলার হবেন। এখন পর্যন্ত আলফি গর্ব করতেই পারেন। কারণ তার ছেলে হালান্ড এই সময়ের অন্যতম সেরা। যদিও নরওয়ের হয়ে তেমন কিছু করতে পারেননি তিনি। যা অর্জন সবই ক্লাবের জার্সিতে।

ভালোর শুরুটা ২০১৯ সালে, রেড বুল সালজবার্গের হয়ে। মূলত হালান্ডের বাবা ফুটবলার হওয়ায় তাকে ক্লাব খুঁজতে বেশি একটা অপেক্ষায় থাকতে হয়নি। এর মধ্যে বল পায়েও ভয়ংকর হয়ে উঠেন আর্লিং।

দুই বছরের মতো সালজবার্গে কাটিয়ে যোগ দেন জার্মান জায়ান্ট বরুশিয়া ডর্টমুন্ডে। সেখানে শুরু হয় তার নতুন যুদ্ধ। গোল করে ব্যতিক্রম উদযাপন দিয়ে আলোচনার জন্ম দেন তিনি। এরপর ম্যানসিটির কোচ পেপ গার্দিওলাও পছন্দ করেন তার খেলা। এরপর বরুশিয়ার সঙ্গে কথা বলে তার সঙ্গে চুক্তি সেরে ফেলেন। সিটিতে এসে আরো ভয়ানক হয়ে উঠেন হালান্ড। সতীর্থরাও তাকে গোল বানিয়ে দিয়ে নিয়মিত সাহায্য করছেন। তিনিও গড়ছেন একের পর এক রেকর্ড।

গত মৌসুমে সিটির ট্রেবল জয়ের পেছনে তার অবদান ছিল অনেক। এই দুজনের বাহিরে রিয়াদ মাহরেজও ক্লাবে পারফর্ম করে হয়েছেন পরিচিত। লিস্টার সিটি এরপর ম্যানসিটিতে লম্বা সময় কাটিয়েছেন। এখন এই আলজেরিয়ানের ঠিকানা সৌদি আরবের আল আহলি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *