এপ্রিল ১৭, ২০২৪ ৯:২৩ পূর্বাহ্ণ
ইরান ও ইসরাইল সংঘাতে জড়িয়েছে। ভারতের দুই মিত্র দেশ একে অপরের সঙ্গে ভয়াবহ সংঘাতে জড়িয়ে পড়ায় নয়াদিল্লি বেশ খানিকটা উদ্বিগ্ন।
দুই দেশের সঙ্গে সম্পর্ক, বিশেষ করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়া বা না নেওয়ার বিষয়ে এখনই নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চায় না ভারত। সংঘাতের পরিস্থিতির পূর্ণাঙ্গ চিত্র মূল্যায়নের পরই এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে চায় দেশটি। রয়টার্স, এনডিটিভি ও হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন বিশ্লেষণে এসব তথ্য পাওয়া যায়।
শনিবার ইসরাইলে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। শুরু থেকেই ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দুই দেশকেই ‘ধৈর্য ধরার’ আহ্বান জানিয়ে আসছে। একই সঙ্গে দেশটি ‘সংলাপ ও কূটনীতির’ মাধ্যমে সংকট সমাধানে পরামর্শ দিয়েছে। এ সংঘাতকে ‘মানবিক বিপর্যয়’ আখ্যা দিয়েছে নয়াদিল্লি।
ওই গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদি ইসরাইল সফর করেন। দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে মোদির ব্যক্তিগত সম্পর্ক বেশ উষ্ণ। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও রাশিয়ার পর ইসরাইলই ভারতের সবচেয়ে বড় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহকারী। সব মিলিয়ে ভারতের কাছে ইসরাইল খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার, বিশেষ করে নিরাপত্তা খাতে।
এদিকে ইরানের সঙ্গে ভারতের কয়েকশ বছরের পুরোনো সম্পর্ক। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর দুই দেশই সেই সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে গেছে। এমনকি ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব সংঘটিত হওয়ার পরও ভাটা পড়েনি দুই দেশের সম্পর্কে। ইরান ভারতে অন্যতম প্রধান তেল সরবরাহকারী দেশ। তেহরানের পরমাণু কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার আগে ইরান ভারতে দ্বিতীয় শীর্ষ তেল সরবরাহকারী দেশ ছিল। বিগত চার বছর ধরে ইরান থেকে ভারত কোনো জ্বালানি তেল না কিনতে পারলেও দুই দেশের সম্পর্ক এখনো অটুট। সর্বশেষ ২০২২ সালে ইরান ও ভারত একটি প্রতিরক্ষা চুক্তিতে স্বাক্ষর করে। বছরখানেক আগে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর নিজেও ইরান সফরে গিয়েছিলেন দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে। এছাড়া ইরানে ভারতের বিশাল বিনিয়োগ আছে। একটি উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ প্রকল্প হলো ইরানে চাবাহার বন্দর নির্মাণ।
ভারতের বাণিজ্যসচিব সুনিল বার্থওয়ালে বলেছেন, ‘আঞ্চলিক সংঘাতের সঙ্গে আমরা অভ্যস্ত। এটা অবশ্য সত্যি যে, সংঘাতের আবহ না থাকলে আমাদের পণ্যের রপ্তানি আরও বাড়ত।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা যেসব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, তা পরিপূর্ণভাবে বোঝার পরপরই কেবল নীতিগত হস্তক্ষেপ করা হবে এবং এই ধারাবাহিকতায় সমস্যাগুলোর সমাধানে যা যা করা প্রয়োজন তা সরকার অবশ্যই করবে।’