এপ্রিল ১৯, ২০২৪ ৭:৩৫ পূর্বাহ্ণ
আওয়ামী লীগের কড়া হুঁশিয়ারি। আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী-এমপিদের পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়রা নির্বাচন করতে পারবে না। এরইমধ্যে এমন যারা প্রার্থী হয়েছিলেন তাদের নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর নির্দেশনাও দিয়েছে দলটি।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার এমন নির্দেশনা দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকেরা নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-এমপিদের জানাতে শুরু করেছেন। এ নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছে দলটি।
বৃহস্পতিবার ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনানুষ্ঠানিক এক বৈঠকে বিভাগীয় সম্পাদকদের দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে এই নির্দেশনা দেন ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, দফতর সম্পাদক ও উপ-দফতর সম্পাদক উপস্থিত ছিলেন।
আরো জানা গেছে, শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদেরও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেও বিষয়টি আলোচনা হবে। নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করলে সরাসরি বহিষ্কারের বিধান রয়েছে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন সন্ধ্যায় ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এমপি-মন্ত্রীদের কোনো আত্মীয়স্বজন ও ছেলেমেয়েরা অংশ নিতে পারবে না। প্রধানমন্ত্রীর এই নির্দেশনাটি স্পষ্ট করেছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এটি এমপি-মন্ত্রীদের জন্য স্পষ্ট বার্তা। এই নির্দেশনা অমান্য করে কেউ দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিলে এবং এমপি-মন্ত্রীরা কোনো প্রার্থীদের সমর্থন করলে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে দল।
আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, এরইমধ্যে নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে তার ছেলেকে উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর দলীয় নির্দেশনার কথা জানানো হয়েছে।
এ সময় ওবায়দুল কাদের সাংগঠনিক সম্পাদক ও দফতরকে সারা দেশে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের মধ্যে যাদের স্বজন ও পরিবারের সদস্য নির্বাচন করছেন, সেই তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন। এ সময় তাৎক্ষণিকভাবে মাদারীপুর সদরের সংসদ সদস্য ও দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান এবং নোয়াখালীর একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক।
বিষয়টি স্বীকার করে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন ডেইলি বাংলাদেশকে বলেন, আমাদের দলের সভাপতি শেখ হাসিনার বরাত দিয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের তাদেরকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছেন। তারাও নিজ নিজ বিভাগে বার্তা পৌঁছে দিচ্ছেন।
উল্লেখ্য, আগামী ৮ মে উপজেলার নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এ পর্বে ১৪ জন এমপির পরিবারের সদস্য-স্বজনেরা প্রার্থী হয়েছেন। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলায় ছেলে শাবাব চৌধুরীকে ভোট না দিলে উন্নয়নকাজ না করার হুমকি দেন স্থানীয় এমপি একরামুল করিম চৌধুরী। নাটোরের সিংড়া উপজেলায় আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমদ পলকের শ্যালকের বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষ প্রার্থীকে অপহরণের অভিযোগও উঠেছে। এসব ঘটনা সভাপতি শেখ হাসিনার দৃষ্টিগোচর হলে তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে ডেকে উপজেলা নির্বাচনে মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের সন্তান, পরিবারের সদস্য ও নিকটাত্মীয়দের ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর এই নির্দেশনা দেন।