চিকিৎসার জন্য ভারতের কলকাতায় গিয়ে সঞ্জীভা গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে খুন হন ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার। এতে আনারকে শ্বাসরোধে হত্যার পর তার নিথর দেহ নিয়ে যে নির্মমতা ও পৈশাচিকতা চালিয়েছে কয়েকজন অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী তার লোমহর্ষক বর্ণনা উঠে এসেছে।
বিভিন্ন সংস্থার কাছে থেকে প্রাপ্ত তথ্যের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, কলকাতার একটি ফ্ল্যাটে হত্যার পর বাংলাদেশি এমপির মরদেহ থেকে প্রথমে চামড়া তুলে ফেলা হয়। পরে নিথর দেহটি টুকরো টুকরো করা হয়। হাড় থেকে মাংস আলাদা করার পর মাংস কিমা করা হয়। পরে একাধিক প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরে শহরজুড়ে যত্রতত্র অংশগুলো ফেলে দেয়া হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, পশ্চিমবঙ্গের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) মুম্বাইয়ে কসাইয়ের কাজে জড়িত অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী জিহাদ হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের পর নির্মম এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। জিহাদকে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের নিখুঁত পরিকল্পনা ও মরদেহ নিয়ে পৈশাচিকতা বর্ণনায় উঠে আসে।
সিআইডির সূত্রের বরাতে সংবাদমাধ্যমটি জানায়, কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে বাংলাদেশি এমপিকে হত্যা ও তার দেহ টুকরো করার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন ২৪ বছর বয়সী কসাই জিহাদ। তাকে শুক্রবার (২৪ মে) কলকাতার বারাসাত আদালতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। জানা গেছে পরিকল্পিত নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক আখতারুজ্জামানের কলকাতায় যাওয়ার দুই মাস আগেই জিহাদকে ডেকে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে জিহাদ স্বীকার করেছে, আখতারুজ্জামানের নির্দেশে তিনিসহ চারজন এমপি আনারকে ফ্ল্যাটে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এমপিকে হত্যার পরে তার শরীর থেকে মাংস এবং হাড় আলাদা করে ফেলে। মূলত পরিচয় নষ্ট করার জন্য এমপির মাংস কিমা করে তা প্লাস্টিকের ব্যাগে রাখা হয়। আর হাড়গুলোকে ছোট ছোট টুকরো করে নেয়া হয়। এর সঙ্গে মসলা মেশানো হয় যাতে কেউ সন্দেহ না করে। পরে ওই ব্যাগগুলো ফ্ল্যাট থেকে বের করে নানা ধরনের যানবাহন ব্যবহার করে কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় ফেলে দেয়া হয়।
সিআইডির সূত্র জানায়, এমপি আনার হত্যার হোতা বাংলাদেশি আমেরিকান আখতারুজ্জামান। তার নির্দেশে কলকাতার নিউ টাউনের ফ্ল্যাটে জিহাদ ও অন্য চার বাংলাদেশি এমপি আনারকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার এমপি আনার খুনের বিষয়টি জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সিআইডি নিউ টাউনের ফ্ল্যাটটিতে রক্তের দাগ ও বেশ কিছু প্লাস্টিকের ব্যাগ পায়। এসব ব্যাগ দিয়ে আনারের দেহের টুকরোগুলো ফেলা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশের বিভাগটি।