নামাজে কাতার সোজা রাখার কারণ, গুরুত্ব ও ফজিলত

নামাজে কাতার সোজা রাখার কারণ, গুরুত্ব ও ফজিলত

ধর্ম

নভেম্বর ৮, ২০২৩ ১২:৫৮ অপরাহ্ণ

বিশ্বনবী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাতে নামাজ পড়ার সময় কাতার সোজা করার বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতেন। তিনি সাহাবিদের কাতার সোজা করতে, কাতারের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা না রাখতে নির্দেশ দিতেন।

জামাতে নামাজ পড়ার সময় কাতার সোজা করার গুরুত্ব অপরিসীম।

হাদিসে এসেছে- ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কাতার সোজা করো। কাঁধগুলোকে বরাবর রাখ। ফাঁকা জায়গা বন্ধ করো। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিও না। যে কাতার সংযুক্ত করে আল্লাহ তাআলাও তাকে সংযুক্ত করে নেন। আর যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহ তাআলা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন’। (আবু দাউদ: ৬৬৬)

ভাইদের হাতে নরম হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো- কেউ যদি কাতার সোজা করার জন্য তোমাদেরকে হাত দিয়ে একটু টান দিয়ে এগিয়ে বা পিছিয়ে নিতে চায় তাহলে তার হাতে নরম হয়ে যাওয়া।

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা নামাজের ইকামত দেওয়া হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের অভিমুখী হয়ে বললেন, তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করো এবং গায়ে গায়ে মিশে দাঁড়াও। কেননা আমি তোমাদেরকে আমার পেছন দিক থেকেও দেখতে পাই’। (বুখারি: ৭১৯)

অন্য এক হাদিসে এসেছে, নোমান ইবনে বশির (রা.) বলেন, ‘রাসূলুল্লাহ (সা.) আমাদের কাতারগুলোকে এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তিনি তীর সোজা করবেন। এভাবে তিনি করতে থাকলেন যতদিন না দেখলেন যে, আমরা বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছি। অতঃপর একদিন তিনি নামাজের জন্য বের হলেন। যখন তিনি তাকবির দিতে যাবেন সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে তার বুক কাতারের বাইরে বের করে রেখেছে। তখন রাসূল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহর বান্দারা, হয় তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করবে। নতুবা তোমাদের মধ্যে আল্লাহ তাআলা অবশ্যই বিরোধিতা সৃষ্টি করে দেবেন’। (বুখারি: ৭১৭; মুসলিম: ১০০৭)

আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের কাতারসমূহকে সংলগ্ন কর। কাতারগুলোকে কাছাকাছি রাখ। তোমাদের ঘাড়সমূহকে বরাবর রাখ। যার হাতে আমার জীবন তার শপথ, নিশ্চয়ই আমি শয়তানকে দেখি ভেড়ার বাচ্চার ন্যায় কাতারের মাঝে প্রবেশ করতে’। (আবু দাউদ: ৬৬৭)

কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ানো মূলত ফেরেশতাদের বৈশিষ্ট্য। তারা প্রথমে সামনের কাতার পুরা করেন এবং কাতারে মিলেমিশে দাঁড়ান। (মুসলিম: ৪৩০) কাতার সোজা করে নামাজ আদায়কারীদের জন্য ফেরেশতারা রহমতের দোয়া করেন। এ বিষয়ে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতার সোজা করে। আর যে ব্যক্তি কাতারে ফাঁক বন্ধ করে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন’। (ইবনে মাজাহ: ৯৯৫; মুসনাদে আহমদ: ২৪৬৩১)

ইয়া আল্লাহ! মুসলিম উম্মাহকে নামাজের কাতারসমূহ সোজা রাখার এবং ফাঁক পূরণ করে দাঁড়ানোর মাধ্যমে হাদিসের নির্দেশনা মেনে চলার তাওফিক দান করুন।  আমিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *